
মাঝরাতে পুলিশের সহায়তায় চাষের জমি দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠলো এলাকার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। সিপিআইএম নেতাদের ডাকে জোট বেঁধে প্রতিরোধে সামিল হন বর্গাদার, পাট্টাদাররা। ফলে পিছু হটতে বাধ্য হয় শাসক দলের স্থানীয় নেতা ও তাঁর দলবলেরা।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানার চেন্দুগাড়ি অঞ্চলের ভোলামহুলি মৌজায়। অভিযোগ, বর্গাদার, পাট্টাদারদের চাষের জমির নকল দলিল বানিয়েছিলেন এলাকার তৃণমূল বুথ সভাপতি তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য শান্তি সাউ এবং তাঁর অনুগামীরা। শনিবার রাতে পুলিশি পাহারায় ট্রাক্টর দিয়ে জমির আল তুলে মাটি চষে ফেলে শান্তি সাউয়ের লোকরা। প্রতিবাদ করলে হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করতে বাধ্য করা হয় স্থানীয় কৃষকদের।
জানা গেছে, এরপরেই সারা ভারত কৃষক সভার গ্রাম কমিটির সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ দণ্ডপাঠ-সহ স্থানীয় সিপিআইএম নেতাদের উদ্যোগে গ্রামবাসীরা জড়ো হন। মাত্র ১০ মিনিটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জমি দখলের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবেন তাঁরা। সেই মতো তিনটি মৌজার ২৫০ -এর বেশি পরিবার উপস্থিত হয়। যার মধ্যে ছিলেন শিশু থেকে বয়স্ক এমনকি মহিলারাও।
গ্রামবাসীদের সেই জনরোষ দেখে এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য। এরপরে গ্রামবাসীরা জমিতে নেমে একে একে ৩৬ টি কৃষক পরিবারের জমি চিহ্নিত করে ফিতে ফেলে আল করে জমি দখল নেন। পরের দিন সেই জমিতে সার ও ধানের বীজ ছড়ানো হয়।
এই ঘটনায় স্থানীয় সিপিআইএম নেতা হরিশ সিংহ বলেন, "মহুলি মৌজায় জোতদার তৃণমূল নেতার ১৮ বিঘা জমি খাস হয়েছে। যার মধ্যে মহুলি মৌজার এই মাঠে ৯ বিঘা জমি ৩৬ জন ভাগচাষি বর্গার পাট্টা পেয়েছিল। আরও অনেকে পাট্টা পেয়েছে। প্রথম দিনেই প্রতিরোধ না করলে ওরা এলাকার আদিবাসী, শরব-সহ তফসিলিদের জমি কেড়ে নেবে।"
তিনি আরও বলেন, "তৃণমূলের রাজত্বে ভূমি দপ্তরকে বাস্তুঘুঘুর বাসা বানিয়ে নকল দলিলে পাট্টাদার বর্গাদারদের উচ্ছেদ করতে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটাল তৃণমূল ও তাদের জমি হাঙরের দল। বাকি মৌজাগুলিতেও আগাম সতর্কতা নিয়ে তাঁর প্রস্তুতি সভা করতে হবে"।
স্থানীয় কৃষক নান্তু দিগার বলেন, "শান্তি সাউয়ের বাবা খতুলাল সাউ এবং তাঁর দাদুর নামে ৪০০ বিঘার অধিক জমি ছিল। যার মধ্যে ৩০০ বিঘা জমি বামফ্রন্ট আমলে খাস হয়। এলাকায় ভাগচাষি-সহ গরিব মানুষকে সেই জমি বিলি করা হয়। এখন তাদের উচ্ছেদ করতে নকল দলিল বানিয়ে পুলিশের সাহায্য নিচ্ছে। প্রথম দিনই ৩৬ জনের চাষের জমির আল তুলে দিয়ে মাটি চষে ফেলা হয়"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন