
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জেরে উত্তপ্ত বীরভূমের লাভপুর থানার হাতিয়া গ্রাম। বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণের জেরে অন্তত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত বেশ কয়েকজন। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। ঘটনার পর দেহ লোপাট করা হয়েছে। মৃতের মধ্যে এক ছাত্রও রয়েছে। এই ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়।
লাভপুরের হাতিয়া গ্রামটি নকল সোনার কয়েন বিক্রি চক্রের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ, মানুষকে ফোন করে ভুল বুঝিয়ে গ্রামে ডেকে নকল সোনার কয়েন বিক্রি করা হয়। এই সমস্ত কিছুতে রাজ্যের বর্তমান শাসকদলের নেতারা জড়িত। এই নিয়ে একাধিক অভিযোগও দায়ের হয়েছে পুলিশের কাছে। এমনকি বীরভূম পুলিশের তরফ থেকে জালিয়াতির ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য একাধিকবার বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে এই কয়েন চক্রের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বাঁধে। শুরু হয় বোমাবাজি। গ্রামের মধ্যেই বোমাবাজি চালায় দুষ্কৃতিরা। শনিবার তা চরম আকার নেয়। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশে অভিযোগ থাকার কারণে ছ'মাস ধরে ফেরার ছিলেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি শেখ মইনুদ্দিন এবং তাঁর সহযোগী শেখ মুস্তাফি। গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে শেখ মনিরের নেতৃত্বে একদল লোক মইনুদ্দিনদের বাধা দেয়। শুরু হয় মারামারি।
অভিযোগ, এরপরেই দুইপক্ষের মারামারি শুরু হয়। প্রথমে ফিরে যাওয়ার পরে ফের গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করেন মইনুদ্দিন ও মুস্তাফি। সেই সময় মনিরের গোষ্ঠী ছাতিম পুকুরপাড়ে বোমা বাঁধছিলেন। সেখানেই আচমকা বিস্ফোরণ হয়। জানা গেছে বিস্ফোরণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন - শেখ সাবির (২৬) ও শেখ আলমগীর (১৮)।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই দুই পক্ষই শাসকদলের। যদিও এই ঘটনার সাথে দুরত্ব বজায় রেখেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে এনিয়ে সরকারি ভাবে কেউ কিছু বলেননি এখনও।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে লাভপুর থানার পুলিশ। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। যদিও সকালে ঢুকতে পারেনি পুলিশ। বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তাধীন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন