TMC: ২৬-এ তৃণমূলের আসন সংখ্যা কমতে পারে, বিস্ফোরক হুমায়ুন কবীর! বিধায়ককে 'লাস্ট ওয়ার্নিং' দিল দল

People's Reporter: তৃণমূল বিধায়কের ভবিষ্যৎবাণী, আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস-সিপিআইএম এবং ISF জোট করে লড়বে। কিছু না হলেও অন্তত ৩০ থেকে ৪০টা আসন পেতে পারে এই জোট।
তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর
তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরছবি - সংগৃহীত
Published on

২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের আসনসংখ্যা নেমে আসবে ২০০-এর নীচে। সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এমনই মন্তব্য করেছেন মুর্শিদাবাদ ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আর বিধায়কের এহেন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ দল। শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বিধায়ককে। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "এটাই লাস্ট ওয়ার্নিং"।

সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ১৯৫-১৯৮ টি আসন পাবে। যেখানে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২১৫-এর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্য়াগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার কথা জানিয়েছেন, সেখানে দলীয় বিধায়কের এহেন মন্তব্যের পর বিতর্ক শুরু হয়েছে।

এখানেই শেষ নয়। বিধায়ক আরও জানান, আগামী বছর নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতি সংখ্যালঘুদের ভোট কমবে। সংখ্যালঘুদের ভোট কমার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে না পারা। এই কারণে তৃণমূলের প্রতি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে বলে দাবি করেন হুমায়ুন। আর এর ফলে লাভবান হবে সিপিআইএম-কংগ্রেস। তৃণমূল বিধায়কের ভবিষ্যৎবাণী, আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস-সিপিআইএম এবং ISF জোট করে লড়বে। কিছু না হলেও অন্তত ৩০ থেকে ৪০টা আসন পেতে পারে এই জোট।

তৃণমূল বিধায়কের দলের বিরুদ্ধে এহেন বিতর্কিত মন্তব্য সামনে আসার পরেই তাঁকে সতর্ক করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শোভনদেব বলেন, ‘‘এর আগেও সতর্ক করা হয়েছিল। তার পরেও উনি এমন কিছু কথা বলছেন, তাতে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হচ্ছে। আমি মৌখিক ভাবেও বলেছিলাম। বার বার বলা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না, তাই ওয়ার্নিং দেওয়া হল। এর পর দল সিদ্ধান্ত নেবে।’’

এই ওয়ার্নিং নিয়ে হুমায়ুন বলেন, ‘‘আমি কেন মুখ খুলি, তার যথাযথ উত্তর দেব। আমি আমার ক্ষোভের কারণ জানিয়েছি শোভনদেববাবুকে। আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নানা বিষয়ে খবর দিই। অনুনয়-বিনয় করি। তাতে যখন কাজ হয় না, তখন মুখ খুলি। বাকি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ওঁরা নেবেন। আমি খারাপ কাজ করি না। কেউ করলেও তা-ও বরদাস্ত করি না।’’

এর আগে দু'বার শোকজ নোটিশ পেয়েছিলেন হুমায়ুন। এর আগে গত বছর কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে প্রথমে শো কজ করা হবে। সংশ্লিষ্ট নেতাকে জবাব দিতে হবে। পর পর তিন বার একই ঘটনা ঘটলে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হবে তৃণমূল থেকে। এই নিয়ে হুমায়ুনকে তিন বার নোটিশ পাঠানো হল। আর এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি এবার দল থেকে বহিষ্কৃত হতে চলেছেন হুমায়ুন?

তৃতীয় বার নোটিস পাওয়ার পর শুক্রবার হুমায়ুন বলেছেন, ‘‘ফাইনাল ওয়ার্নিং না সেমি ফাইনাল, ও সব আমি বুঝি না। এ ব্যাপারে আমি প্রকাশ্যে কিছু বলব না।’’ বিধায়কের সংযোজন, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য দল করি। উনি যদি বলেন আমি দলের জন্য ক্ষতিকারক বা আমার জন্য দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, উনি যদি আমাকে দল করতে বারণ করেন, আমি করব না। বাইরে যারা দলের খারাপ চায়, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় যদি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আমায় নোটিস দেয়, আমি জবাব দেব। এর আগেও দিয়েছি। আবার দেব।’’

তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর
Plane Crash: সঞ্জয় গান্ধী থেকে বিজয় রূপানি - ভারতের যে বিশিষ্টরা বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in