এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নাম জড়াল তৃণমূল নেতার ছেলের। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের জেরে অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটে। আর তাতে ওই নাবালিকার মৃত্যু ঘটেছে। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে রাতারাতি নাবালিকা দাহ করতে হবে। এমনই চাপ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতার পরিবারের বিরুদ্ধে। গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সমর গোয়ালার ছেলে ব্রজগোপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
গত সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার হাঁসখালি এক নম্বর ব্লকের গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগর এলাকায়। অভিযোগ, গত সোমবার ব্রজগোপালের জন্মদিন ছিল। সেই পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয় বগুলার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে। নাবালিকার পরিবার দাবি করেছে, সেদিন একজন মহিলা ও আরও কয়েকজনকে দিয়ে মেয়েকে ব্রজগোপালদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল।
ব্রজগোপালের পরিবারের পক্ষ থেকে রাতে নাবালিকার পরিবারকে জানানো হয় যে, পার্টিতে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাঁকে স্থানীয় কোনও ‘হাতুড়ে ডাক্তার’-এর কাছে নিয়ে যাওয়া হোক। একইসঙ্গে তাকে কোনও সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে নিষেধ করা হয় বলে অভিযোগ।
পরামর্শ মতো ওই নাবালিকাকে স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি। মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়। অত্যধিক রক্তপাতে ওই নাবালিকার মৃত্যু হয় বলে দাবি। এদিকে মঙ্গলবারই জোর করে তার দেহ স্থানীয় শ্মশানে দাহ করিয়ে দেন ওই তৃণমূল নেতা ও তার দল।
অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের হাথরস-কাণ্ডের তুলনা টেনেছেন। দুটি ক্ষেত্রেই ধর্ষণ, নির্যাতনের জেরে মৃত্যু ও দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে হাথরসে নির্যাতিতার দেহ পরিবারের হাতে তুলে না দিয়ে জোর করে দাহ করে পুলিশ। এ ক্ষেত্রে নাবালিকার পরিবারই দেহ দাহ করেছে। অভিযোগ, তাঁদের বাধ্য করা হয়।
নাবালিকার পরিবারের দাবি, মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে তাঁরা আতঙ্কে ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চাইল্ডলাইন। সংগঠনের কর্মীদের আশ্বাসে তাঁরা শেষ পর্যন্ত হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
ওই পার্টিতে চার-পাঁচ জন পুরুষ ও এক প্রৌঢ় আমন্ত্রিত ছিলেন সূত্রের খবর। পুলিশের বিরুদ্ধেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের অভিযোগ, হাঁসখালি থানার ওসি মুকুন্দ চক্রবর্তী গণধর্ষণের অভিযোগ নিতে চাননি।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।