
কাকদ্বীপে শিক্ষকের উপর প্রকাশ্যে হামলার ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা। ক্যানিং স্টেশন চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য তথা স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ত্রিদিব বাড়ুইকে। ঘটনার পর থেকেই তিনি বেপাত্তা ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বীরেন্দ্র বিদ্যানিকেতন স্কুলে। অভিযোগ, বুধবার স্কুলের করিডরে ছাত্রছাত্রীদের সামনেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে টেনে নিয়ে যান ত্রিদিব বাড়ুই। পরে স্কুলের বাইরে ও এসডিপিও কার্যালয়ে তাঁকে ঘাড়ধাক্কা দেওয়া হয় এবং নানাভাবে হেনস্থা করেন তৃণমূল নেতা বলে অভিযোগ ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কীভাবে ছাত্রছাত্রীদের সামনেই শিক্ষককে হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতা। (সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।)
আক্রান্ত শিক্ষক থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিয়েছিলেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা - এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় সমালোচনা। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি তা নিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে পুলিশও। এরপর হারউড পয়েন্ট থানা তৎপরতা দেখিয়ে এফআইআর দায়ের করে গ্রেফতার করে অভিযুক্তকে। পুলিশ জানিয়েছে, আজই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে।
এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। আক্রান্ত শিক্ষকের বাড়ি স্কুল লাগোয়া এলাকায় হওয়ায় তিনি ও তাঁর পরিবারও উদ্বেগে রয়েছেন। শিক্ষক সংগঠনগুলিও এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। প্রশ্ন উঠছে শাসক দলের ভূমিকা নিয়েও। কারণ শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনা এই প্রথম নয়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় একাধিকবার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় শাসকদলকে কটাক্ষ করে সিপিআইএম নেতা শতরূপ ঘোষ এক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ হয় না, শিক্ষক নিগ্রহ হয়। গত ১৪ বছর ধরে এটাই আমরা দেখছি। আরাবুল শিক্ষককে জগ ছুড়ে মারছে। ১৪ বছরে ক্যাম্পাসে কত শিক্ষককে আমরা মার খেতে দেখলাম, তা নিয়ে বই লেখা হয়ে যাবে। না মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা আছে, না কোনও অনুশোচনা।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন