
সঞ্জীব খান্না সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পর মঙ্গলবার প্রথমবার শীর্ষ আদালতে আর জি কর মামলার শুনানি ছিল। এদিন শুনানিতে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। পাশাপাশি, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যে বলার অভিযোগও তোলেন তাঁরা। আগামী মার্চ মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তিনমাস পর শুনানি শুনে ‘হতাশ’ নির্যাতিতার বাবা-মা।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ আর জি কর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কত দিনে শেষ হবে এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া? উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহেতা জানান, দ্রুতই শেষ হবে বিচারপ্রক্রিয়া। এমনকি নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার জানান, ‘ছুটির দিন ছাড়া প্রতি দিনই নিম্ন আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। এখনও পর্যন্ত ৫১ জনের মধ্যে ৪৩ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সিবিআই আশা করছে আগামী সপ্তাহের আগে ট্রায়াল শেষ হয়ে যাবে। আশা করছি অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেবে সিবিআই’।
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে সিবিআইকে। যদিও এদিন শীর্ষ আদালতে নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ, ‘আদালতে দাঁড়িয়ে এ ভাবে মিথ্যা বলা যায়, তা আমরা জানতাম না। সেই মিথ্যার উপর সুপ্রিম কোর্ট নজরদারি চালাচ্ছে। সিবিআই আদালতে বলছে, তারা আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। কিন্তু আমরা কিছুই জানতে পারি না’।
এমনকি নিম্ন আদালত তথা শিয়ালদা আদালতে সিবিআএর চার্জশিট জমা দেওয়া নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন নির্যাতিতার বাবা। তাঁর অভিযোগ, ‘সিবিআই বলেছিল আমাদের জানিয়ে শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট জমা করবে তারা। কিন্তু পরে দেখলাম, আমাদের না-জানিয়েই তারা চার্জশিট জমা দিয়ে দিয়েছে’। এমনকি অতিরিক্ত চার্জশিট কবে পেশ হবে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার বাবা।
একই অভিযোগ নির্যাতিতার মায়েরও। তিনি বলেন, ‘আজও আমরা জানতে পারলাম না, কেন আমাদের মেয়েকে খুন হতে হল?’ তবে সিবিআইয়ের উপর আস্থা হারাচ্ছেন না নির্যাতিতার বাবা-মা। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের আইনজীবী বৃন্দা বলেন, ‘দ্রুত বিচার চাইছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁরা আশা করছেন, এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকলে তা খুঁজে বার করবে সিবিআই’।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৭ মার্চ। তবে প্রধান বিচারপতি জানান, শিয়ালদা আদালতে যদি বিচারপ্রক্রিয়া দেরি হয়, তবে তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে। প্রয়োজনে পরবর্তী শুনানির আগে শুনবেন বিচারপতি। অন্যদিকে, প্রায় তিনমাস পর আবার শুনানি হওয়ায় ‘হতাশ’ নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁর বাবা জানান, ‘বিচারব্যবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশায় আছি। এত পরে কেন সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট?’ তবে বিচারব্যবস্থা নিয়ে আইনের উপর ভরসা রেখেছে নির্যাতিতার পরিবার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন