নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় SSC গ্রুপ 'ডি' পদে কর্মরত ১৬৯৮ জন ভুয়ো কর্মীর পর এবার প্রকাশ্যে এল আরও ৮৫৯ জন ভুয়ো শিক্ষাকর্মীর নাম। OMR শীট দেখে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার অবস্থা। এই ৮৫৯ জনের মধ্যে কেউই পাশ করতে পারেননি। বেশিরভাগই শূন্য, এক অথবা দুই নম্বর পেয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ আবার নিজের রোল নম্বরও সঠিকভাবে লিখতে পারেননি। অথচ বর্তমানে প্রত্যেকেই কর্মরত!
সূত্রের খবর, সোমবার ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টররা যে ৮৫৯ জন ভুয়ো শিক্ষাকর্মীর সন্ধান দিয়েছেন, তাদের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে রয়েছেন ৩৯৮ জন, পূর্ব মেদিনীপুরের ৩৫০ জন, কোচবিহারে ১০৯ জন এবং বাঁকুড়া থেকে রয়েছেন ২ জন। এরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। গত শনিবার থেকে এরা কেউই স্কুলে আসছেন না।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ৩৯৮ জন গ্রুপ 'ডি' শিক্ষাকর্মীর ভুয়ো নিয়োগ তালিকা পৌঁছেছে পশ্চিম মেদিনীপুর ডিআই দপ্তরে। এই প্রসঙ্গে সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিআই চাপেশ্বর সর্দার বলেন, আজ (সোমবার) ছুটির দিন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) অফিস গিয়ে নির্দেশিকা খতিয়ে দেখা হবে। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
অন্যদিকে, বাঁকুড়া এবং কোচবিহারের শীতলকুচিতে যেসব ভুয়ো শিক্ষকরা ধরা পড়েছেন তাদের মধ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি উভয় দলের কর্মী রয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। কোচবিহারের শীতলকুচিতে যে দু'জন অবৈধ শিক্ষিকা ধরা পড়েছেন, তাঁদের একজন তৃণমূল নেতার মেয়ে। অপরজন বিজেপি নেতার পুত্রবধূ। রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের তরফে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত শিক্ষাকর্মীদের বিষয়ে কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে অবহিত করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় (মাধ্যমিক) পরিদর্শক সমর চন্দ্র মণ্ডল জানান, শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ১০৯ জনকে আদালতের নির্দেশের কপি দেওয়া হবে। এদের চাকরি থাকা না থাকা নির্ভর করছে আদালতের উপর। এই তালিকায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিকের এক ঘনিষ্ঠের নাম রয়েছে। এছাড়া, বাকি ১০৮ জনের প্রত্যেকেই শাসক দলের ঘনিষ্ঠ।
একই চিত্র বাঁকুড়ায়, সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। SSC-র OMR শীটে দেখা গেছে দু'জনেই ৪৮ নম্বর পেয়েছে। কিন্তু সিবিআই-র হাতে থাকা OMR শীটে দেখা গেছে দু'জনেই শূন্য পেয়েছে।
এই দুই তৃণমূল নেতা স্থানীয় দুটি স্কুলে প্রায় ৬ বছর ধরে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষাকর্মী হিসেবে কর্মরত। দু'জনই বাঁকুড়া ১ নং ব্লকের জগদোল্লা ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। এদের বাড়ি পোয়াবাগানের অন্তর্গত পাতালখুড়ি গ্রামে। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া জেলা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সোমবার এই বিষয়টি হিন্দু স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।