
পুলিশকে অশ্লীল ভাষায় হুমকি দেওয়ার অভিযোগে শনিবার বেলা ১১ টায় বোলপুর এসডিপিও অফিসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। কিন্তু এদিন নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও হাজির হননি তিনি। সেকারণে রবিবার দুপুর ১১ টায় ফের তাঁকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, অনুব্রতকে গ্রেফতারির দাবিতে সাঁইথিয়া থানায় এফআইআর দায়ের করেছে বিজেপি।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সকাল ১১টায় এসডিপিও অফিসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। কিন্তু এদিন সকালে আইনজীবী মারফত তিনি জানান, তিনি হাজিরা দিতে পারবেন না। পুলিশের কাছে কিছুদিন সময় চেয়েছেন। পাশাপাশি, শারীরিক অসুস্থতার কথাও বলেছেন।
এরপরেই রবিবার সকাল ১১টায় ফের তাঁকে তলব করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘রবিবার বেলা ১১টার সময় ওঁকে বোলপুরের এসডিপিও অফিসে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে"।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এক্স মাধ্যমে একটি অডিও শেয়ার করেন। যেখানে অনুব্রত মণ্ডলকে এক পুলিশ কর্তাকে গালিগালাজ করতে শোনা যায়। পরে জানা যায় ওই পুলিশ কর্তা হলেন বোলপুর থানার আইসি। (যদিও ওই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)
এই ঘটনার পরই অনুব্রতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায় তৃণমূল। দলের তরফ থেকে অনুব্রতকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়। শুক্রবার বেলা গড়াতেই পুলিশের কাছে নিঃশর্ত ভাবে ক্ষমা চান অনুব্রত। ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, রাগের মাথায় তিনি এই কথাগুলো বলেছিলেন।
তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর। পুলিশকর্মী লিটনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ২২৪ (সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও কর্তব্যরত কর্মীকে হুমকি), ১৩২ (সরকারি কর্মচারীকে হেনস্থা), ৭৫ (শ্লীলতাহানি ও হেনস্থা) এবং ৩৫১ (হুমকি) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
পাশাপাশি, এই অডিও ভাইরাল হওয়ার পরই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। অনুব্রত মণ্ডলের ৫জন হাউস গার্ডকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৪ জন নিরাপত্তারক্ষীকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, অনুব্রতকে গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার বেলায় রামপুরহাট থানার সামনে জড়ো হন বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকেরা। তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে পুলিশের সঙ্গেই ধস্তাধ্বস্তিতে জড়ান বিজেপি কর্মীরা। এরপরে রামপুরহাট থানাতেও অনুব্রতের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘পুলিশ লঘু মামলা রুজু করেছে। অনুব্রতের কিচ্ছু হবে না। ও জামিন পেয়ে যাবে। উল্টে দেখবেন, আইসিকে সাসপেন্ড হতে হবে"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন