
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের এক বিধায়কের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি (Naushad Siddiqui)। তাঁর অভিযোগ ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার দিকে।
নওশাদের দাবি, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শওকত মোল্লা তাঁকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এমনকি মন্ত্রিত্ব দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। সোমবার শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও দায়ের করেন নওশাদ। যদিও নওশাদের দাবি অস্বীকার করেছেন শওকত। পাল্টা তাঁর দাবি, "প্রমাণ করুন!"
সোমবার সকালে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শওকতের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা রুজু করেন নওশাদ। এরপরে সংবাদমাধ্যমের সামনে ভাঙড়ের বিধায়ক বলেন, “শওকত মোল্লা তাঁর বক্তব্যের এক জায়গায় বলেছেন, আমি নাকি বিজেপির কাছ থেকে ৩০ কোটি টাকা নিয়েছি। এই মর্মে আমার নামে মিথ্যাচার করছেন। পাবলিক ডমেনে আমার সম্মানহানি করছেন। আমি শওকত মোল্লার এই কথার উত্তর আইনি ভাষায় দিচ্ছি। কবে কোথায় টাকা নিয়েছি, ৫০০ টাকার নোট নাকি ১০০০ টাকার নোট নিয়েছি, কার মাধ্যমে নিয়েছি, কোর্ট কেসে জানান।”
তিনি আরও বলেন, “যে যা খুশি বলে বেরিয়ে যাবেন, সেটা তো হতে পারে না। আমাকে ১৯টা মিথ্যা কেস দিয়েছে। সেটা মাথায় নিয়ে লড়াই চালাচ্ছি। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়, সামাজিকভাবে আমার মানসম্মান খারাপ করতে চাইছে। আমি স্বচ্ছ আছি, আত্মবিশ্বাস আছে, আইনের মাধ্যমে জবাব চাইছি।”
তবে কেন হঠাৎ করে নওশাদকে টার্গেট করা হল? এর উত্তরে আইএসএফ বিধায়ক জানান, “বিজেপির ৭৭টা বিধায়ক, কোনও সমস্যা নেই। কোনও পর্যবেক্ষক নেই। আইএসএফের একজন বিধায়কের জন্য কেন তাহলে? আসলে আইএসএফের একজন বিধায়কই বুঝিয়ে দিচ্ছে, বিজেপি-তৃণমূলের সমঝোতাটা কোথায়? আমাকে প্রথমে অফার করেছে, প্রত্যাখান করেছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিল, ৪২ দিন জেল খেটেছি। একবার ২৪ ঘণ্টা জেল খাটাল, তারপর যখন ওদের কাছে মাথানত করছি না, ওরা তখন সামাজিক মাধ্যমকেই আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চাইছে।"
যদিও ভাঙড়ের বিধায়কের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন শওকত মোল্লা। তিনি বলেন, "মাথায় টুপি দিয়ে বললেই ভাবছে সবাই বিশ্বাস করবে। একজন ভণ্ড বিধায়ককে তৃণমূল নেবে, এরকম অবস্থা দলের হয়নি"।
অন্যদিকে, নওশাদকে কটাক্ষ করেছেন শাসকদলের আর এক নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, "ওঁকে কেউ টাকা অফার করে থাকলে সেটা কারা, নামগুলো কেন প্রকাশ করছেন না উনি। কেউ যদি টাকা অফার করে থাকেন, সেটা তো অপরাধ। টাকা কেউ অফার করতে পারে না। সেই অপরাধটা উনি চেপে যাচ্ছেন কেন? নাকি এই শুভেন্দু অধিকারী নওশাদ ভাই নওশাদ ভাই বলছিল, দাদার রোগ কি ভাইও লাগিয়েছেন? বড় বড় হাঁকডাক দেব, কিন্তু বাস্তবের মাটিতে কিছু প্রমাণ করার জায়গায় নেই।"
এরপরেই তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, "নওশাদ অতই জনপ্রিয় নেতা হয়ে থাকলে বিধানসভায় ২০ হাজার ভোটে জিতে থাকা আসনে লোকসভা ভোটে ৪০ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকতেন না।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন