সংবাদমাধ্যম শুধু ভাঙন দেখাচ্ছে, তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠছে তা দেখাচ্ছে না - সেলিম

সেলিম বলেন, 'তৃণমূল দলে এমন এমএলএ আছে যারা বিজেপির কাছে জমা আছে, আবার বিজেপিতেও এমন অনেক নেতা ও এমএলএ আছে যারা তৃণমূলের কাছে জমা আছে। দুই দলেরই 'কমন মেম্বারশিপ' আছে।'
মহঃ সেলিম
মহঃ সেলিমছবি - মহঃ সেলিম ফেসবুক পেজ
Published on

বিজেপি ও তৃণমূল সাধারণ মানুষের কণ্ঠরোধ করছে। গরীব মানুষের পেটের ভাত কেড়ে নিচ্ছে। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম

সোমবার দুপুরে সিপিআই(এম) দার্জিলিং জেলা কমিটির সভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, "একথা এখন স্পষ্ট, বিজেপি এবং তৃণমূল দার্জিলিং-র বৈঠকে আলোচনা করেই ধনখড়কে প্রার্থী করেছে। আমরা যা বলেছি, সেটাই সকলের চোখের সামনে উঠে আসছে।"

সভার পর শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মহ: সেলিম। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, "আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ বার্তা নিয়ে এই জেলায় এসেছে। আড়াই ঘণ্টা ধরে তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী চুপ কেন? মমতা ব্যানার্জী নাকি স্পষ্ট বক্তা? তবে এখন কেন চুপ করে রয়েছেন? রাষ্ট্রপতি থেকে উপরাষ্ট্রপতি, রথ থেকে উল্টোরথ। কারা উল্টোপথে হাঁটছে? যতই মিডিয়ার জোরে মমতা ব্যানার্জী আর তৃণমূলকে বিজেপি বিরোধীপন্থী হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা হোক না কেন, আসলে ওরা যে আরএসএস-র নির্দেশে চলে, নাগপুর থেকে বার্তা এলে সব সিদ্ধান্ত হয় সেটাই এখন সবার সামনে আসছে। সংবাদমাধ্যমে বিরোধীদের মধ্যে ভাঙন দেখানো হচ্ছে সবসময়। কিন্তু তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠছে, তা দেখানো হচ্ছে না।"

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে সেলিম বলেছেন, "উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তাই। পঞ্চায়েতের ভোট হলে শাসকদলের কী ভূমিকা থাকে, সেটা সবার জানা। শাসকদল এমএলএ, পৌরসভার কাউন্সিলর, মহকুমা পরিষদের ভোট এবং ভোটের প্রতিনিধিদের কেনাবেচার চেষ্টা করে। এরকম পরিস্থিতিতে আরও বেশি শক্তিশালী বিরোধী ঐক্য প্রয়োজন। একনায়কতন্ত্রী, স্বৈরতান্ত্রিক ঝোঁক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ওদের মূল লক্ষ্য বিরোধী শূন্য করা। তার মধ্যেই যারা বিরোধী থাকার, থাকবে।"

তৃণমূল এবং মমতা ব্যানার্জিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "তৃণমূলকে আমরা কোনও দিনই বিশ্বাস করিনি। তাই 'বিশ্বাসঘাতকের' মত বড় কথা বলতে পারব না। যারা বিশ্বাস করেছেন, তারাই বিশ্বাসঘাতক বলবেন। তৃণমূল দল ঘাসফুলের যে প্রতীক পেয়েছে সেক্ষেত্রেও আদবানিজী নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, 'আমাদের একটা সহযোগী দল, তাদের ফুলের মত চিহ্ন দাও।'"

তিনি আরও বলেন, "তৃণমূল দলে এমন এমএলএ আছে যারা বিজেপির কাছে জমা আছে, আবার বিজেপিতেও এমন অনেক নেতা ও এমএলএ আছে যারা তৃণমূলের কাছে জমা আছে। দুই দলেরই 'কমন মেম্বারশিপ' আছে।"

সাধারণ মানুষের দুর্দশার কথা তুলে ধরে সেলিম বলেন, "কেরোসিন তেল গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামি পশ্চিমবঙ্গে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কোনও ভর্তুকি দিচ্ছে না। গত কয়েক বছরের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে মূল্যবৃদ্ধি কমানোর জন্য সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। উল্টে সরকার জিএসটি বাড়িয়ে আরও চাপ বাড়ালো। খাদ্য ও জ্বালানি সকলেরই প্রয়োজন। সেটা আদানি ও আম্বানির হাতে তুলে দিতে চাইছে সরকার।"

মহঃ সেলিম
দেশের মালিক এখন আদানি-আম্বানি, পাহাড়-ক্ষেত-খনি সব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে তাদের কাছে - মহ: সেলিম

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in