
গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জেরে সোমবার রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল এসএফআই। যে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠলো রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্র ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে একাধিক জায়গায় সরাসরি সংঘর্ষে জড়ায় এসএফআই-টিএমসিপি।
ছাত্র ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মেদিনীপুর কলেজ চত্বর। এদিন সকাল থেকে ধর্মঘটের সমর্থনে কলেজ পিকেটিং করছিল এসএফআই কর্মীরা। সেই সময় একদল বহিরাগত টিএমসিপি কর্মী এসে এসএফআই-এর পোষ্টার ছিঁড়তে শুরু করলে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। মুহূর্তে তা হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়। ছাত্রীদের ওপর ওই বাহিনী চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের গেটে সকাল থেকে এসএফআই সমর্থকরা পিকেটিং শুরু করে। পাঁশকুড়ার বনমালী কলেজ থেকেও ছাত্রদের মধ্যে হাতাহাতির খবর এসেছে।
এদিন সকাল থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালের চার নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই সহ বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠন। কলা বিভাগে বন্ধ ছিল পঠনপাঠন। এদিনেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ভালোই প্রভাব পড়েছে। এখানে একসময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এসএফআই ও টিএমসিপি কর্মীরা। ছাত্র ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটির গেটেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে এদিন দিল্লিতেও বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই সহ অন্যান্য বাম ছাত্র সংগঠন। মিছিল থেকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পদত্যাগ দাবি করেন এসএফআই নেত্রী দীপ্সিতা ধর।
এদিনের ধর্মঘটের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষাকে। যদিও রবিবার কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে করা এক এক্স বার্তাকে ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ায়। যেখানে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, “আগামীকাল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু, লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী বসতে চলেছেন জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায়। কাল সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীরা রওনা দেবেন নিজের নিজের পরীক্ষাকেন্দ্রে, বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজে। দুৰ্ভাগ্যের, কালই একটি রাজনৈতিক সংগঠনের তরফে রাজ্য জুড়ে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আমাদের শুধু এটুকুই বলার - পরীক্ষার্থী ছাত্রছাত্রীদের প্রতিকূলতায় ফেলে, এমন কোনও কর্মসূচি ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে হতে পারে না।”
যদিও এসএফআই স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছে পুলিশের এই দাবি সঠিক নয়। কারণ শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সঙ্গে এই ধর্মঘটের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।
সোমবার বিকেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী ও প্রাক্তনীদের ডাকে এক বিরাট মিছিল করা হয়। যাদবপুর থেকে শুরু হয়ে এই মিছিল শেষ হবে গোলপার্কে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন