

দু’দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া যায়নি দত্তাবাদের স্বর্ণব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার অপহরণ ও খুনের মামলায় পুলিশের দাবি অনুযায়ী মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত বর্মণ। রাজগঞ্জের ‘নিখোঁজ’ বিডিওর সন্ধানে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই ‘রাজগঞ্জের বিডিও নিখোঁজ, সন্ধান চাই’ পোষ্টার দিয়েছে বিডিও অফিসের বাইরে। জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় এই পোষ্টার মারার পাশাপাশি প্রশান্ত বর্মণের ছবি নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে সাধারণ মানুষজনের কাছে তাঁর খোঁজ করছেন এসএফআই কর্মীরা। উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও এখনও পর্যন্ত প্রশান্ত বর্মণকে খুঁজে পায়নি পুলিশ।
শনিবার থেকেই রাজগঞ্জের বিডিও অফিস এবং অন্যান্য অঞ্চলে ‘সন্ধান চাই’ পোষ্টার লাগাতে শুরু করে এসএফআই কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। এসএফআই কর্মীদের বক্তব্য অনুসারে, ছাত্ররা যখন আন্দোলন করে বা সাধারণ মানুষ আন্দোলন করে তখন পুলিশ অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এখন পুলিশের সেই সক্রিয়তা কোথায়?
এসএফআই রাজগঞ্জ লোকাল কমিটির সদস্যদের বক্তব্য অনুসারে, অফিস খোলা থাকলেও বিডিও তার দপ্তরে আসছেন না। কলকাতার ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় বিডিও প্রশান্ত বর্মনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরেও তিনি আত্মসমর্পণ করেননি। তিনি যদি এই ঘটনায় জড়িত না থাকেন তাহলে ধরা দিতে ভয় কেন? বর্তমানে কেউ তাঁর সন্ধান দিতে পারছে না। তাই নিখোঁজ বিডিওর সন্ধান চেয়ে এই পোস্টার লাগানো হয়েছে।
নিউটাউনের যাত্রাগাছি থেকে গত ২৯ অক্টোবর উদ্ধার হয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার দেহ। ৩১ তারিখ নিহত ব্যবসায়ীর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই বিডিও এবং তাঁর কয়েকজন সঙ্গীর বিরুদ্ধে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অপহরণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই উঠে আসে প্রশান্ত বর্মণের নাম। আদালতে পুলিশের দাবি স্বর্ণকার হত্যার ঘটনায় তিনিই মূল অভিযুক্ত। যদিও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আগেই তিনি বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আর্জি জানান। পরে কলকাতা হাইকোর্টে সেই আগাম জামিনের নির্দেশ খারিজ হয়ে যায়। একইসঙ্গে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় আদালত। যদিও আদালতের নির্দেশ মেনে আত্মসমর্পণ না করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণ। এরপর থেকেই অফিসেও যাচ্ছেন না তিনি। যদিও ইতিমধ্যেই পুলিশের আবেদন মেনে নিয়ে প্রশান্ত বর্মণের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বিধাননগর মহকুমা আদালত।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ওই বিডিওর গাড়ির চালক এবং উত্তরবঙ্গের এক ঠিকাদার, কোচবিহারের এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর গাড়ির চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে নিহত ব্যবসায়ীর ময়নাতদন্ত রিপোর্টে দেখা গেছে তাঁর দেহে ৩২টি ক্ষতচিহ্ন ছিল।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন