
ফের জৌলুস ফিরল বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ের ‘সোনার মা কালী’-এর পুজোর। মায়ের গলায়, হাতে, কোমরে - চারদিকে শুধু সোনার ঝলকানি! এ বার নাকি প্রায় ৬০০ ভরি সোনা দিয়ে সাজানো হয়েছে দেবীকে। পাশাপাশি, এবার পুরানো মেজাজে ফিরেছেন অনুব্রত মণ্ডল।
২০২২ এবং ২০২৩ সালে গরু পাচার মামলায় বন্দি ছিলেন তিহাড় জেলে। যার জেরে থাকতে পারেননি বোলপুরের বাড়ির এবং কার্যালয়ের কালিপুজোতে। ওই দু'বছর নামমাত্র অল্প গহনা দিয়ে মায়ের পুজো সারা হয়েছে। জেলমুক্তি হলেও গত বছর আত্মীয়বিয়োগের জেরে দূর থেকে মাকে দর্শন করেছেন কেষ্ট। আর সেই পুজোতেই ফিরল জাঁকজমক।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর দেবীকে সাজানো হয়েছিল প্রায় ৫৭০ ভরি সোনায়। এ বার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়েছে। এবছর মাকে আনুমানিক ৬০০ ভরি গয়না দেওয়া হয়েছে। সোনার সঙ্গে রয়েছে হিরে, চুনি, পান্না আর নানান রত্নখচিত অলঙ্কার। স্থানীয়দের মতে, এই পুজো কেবল রাজনৈতিক নেতার নয়, বোলপুরবাসীর উৎসব - যেখানে ধর্ম, ঐতিহ্য আর আভিজাত্য মিলেমিশে একাকার।
দুপুরেই কার্যালয়ে পৌঁছায় কেষ্ট। এরপর সাড়েন দেবী দর্শন। অনুব্রতর কথায়, “সারা বছরে আমি একমাত্র এই একটা দিন উপবাস করি। আমাদের পুজোয় ভোগের বিশেষ আয়োজন থাকে। প্রতি বছর ভক্তেরা মাকে ১০ থেকে ১২ ভরি সোনা দান করেন। মাকে সোনা পরানোর সময়ে আমি নিজে উপস্থিত থাকি। এটা আমি দেখতে ভালবাসি। মা সোনা পরে থাকলে আমি শান্তি পাই।”
সমস্ত গহনা কী আসল? এর উত্তরে অন্যতম পুজো উদ্যোক্তা অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘মা কখনও টিনের অলঙ্কার পরেছে নাকি! আমার তো জানা নাই। মা নিজের গয়না নিজেই তৈরি করে নেন।’’
১৯৮৮ সালে শুরু হয়েছিল এই পুজো। তবে ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেড়েছে এই পুজোর জাঁকজমক। তবে মাঝে মা এবং স্ত্রী বিয়োগের পর দেবীকে নিজে হাতে সাজাতে পারেননি অনুব্রত। তবে ২০২০ সালে ৩০০ ভরিরি বেশি সোনার গয়না দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালে সোনার মুকুট, বাউটি, বাজুবন্ধ, কানের দুল, গলার হার, হাতের আংটি, কোমর বিছে মিলিয়ে প্রায় ৫৭০ ভরি সোনার গয়নায় মাকে সাজিয়েছিলেন কেষ্ট।
এত ভরি গহনা দিয়ে মাকে সাজানো নিয়ে বহু প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তবে সে সমস্ত প্রশ্নে বিশেষ আমল দেননি অনুব্রত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন