
"প্রয়োজনে দল ছেড়ে দেব। দলের পরোয়া নেই!" বৃহস্পতিবার নিজের কেন্দ্রেই হামলার মুখে পড়ে এবার হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী (Siddikulla Chowdhury)। পাশাপাশি, ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আগামী ১০ জুলাই এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় মহামিছিল করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী।
মন্তেশ্বরের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। তিনি রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রীও। বৃহস্পতিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে যান সিদ্দিকুল্লা। মূলত একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। অভিযোগ, তাঁর কনভয় মালডাঙা এবং মন্তেশ্বর বাজার এলাকায় পৌঁছালে ঝাঁটা, কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কয়েক জন। মন্ত্রীকে দেখে 'গো ব্যাক' স্লোগানও দেওয়া হয়।
অভিযোগ, 'চিটিংবাজ-ধাপ্পাবাজ' বলে আক্রমণ করে ইট-রড-লাঠি দিয়ে হামলা চালানো হয় মন্ত্রীর গাড়িতে। মন্ত্রী নিজেও আহত হন বলে অভিযোগ। তাঁর হাতে চোট লেগেছে বলে জানান মন্ত্রী। দাবি, দলের কর্মীরাই মন্ত্রীর উপরে হামলা চালিয়েছেন। অভিযোগের তীর মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহমেদ হোসেন শেখের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তাঁর মদতেই তাঁর অনুগামীরা মন্ত্রীর উপর হামলা চালিয়েছেন। এমনকি খুনের চেষ্টার অভিযোগও এনেছেন মন্ত্রী। গাড়িতে থাকা ছ’জন জখম হয়েছেন। যদিও এই ঘটনা নিয়ে আহমেদের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।
অন্যদিকে, এই ঘটনার পরেই সোজা অভিযোগ জানাতে জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে যান মন্ত্রী। সুপারের সঙ্গে কথা বলার পর সেখান থেকে বেরিয়ে পুলিশের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ঘটনার সময় পুলিশ নির্বাক দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। তারা চাইলে হামলা আটকাতে পারত কিন্তু করেনি। এনিয়ে পুলিশ সুপার তাঁর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে জানান মন্ত্রী।
এরপরেই মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, "এই চক্রান্ত যারা করল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সন্ত্রাস যদি বন্ধ না হয়, বলে দিচ্ছি, সিপিআইএমের আমলে যে রকম আন্দোলন করেছিলাম, সে রকম এবারও হবে। আমার সারা রাজ্যে ১২০০ মাদ্রাসা রয়েছে। সাড়ে চারশো জমিয়তের ইউনিট আছে। ২০ লক্ষ সদস্য আছে। খুব স্পষ্ট ভাবে বলছি, দল যদি ব্যবস্থা না করে, আগামী ১০ জুলাই কলকাতায় মহামিছিল বার করে এর প্রতিবাদ করব"।
তিনি আরও জানান, "এই নৈরাজ্য আমরা মানতে পারব না। তাতে দরকার হলে দল ছেড়ে দেব। এই দলের পরোয়া নেই। নৈরাজ্যকে দমন করতে হবে। বলতে হবে, ভাল মানুষকেই চাই। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী নৈরাজ্য চায়নি বলেই সিপিআইএমকে সরতে হয়েছে। তৃণমূলকে স্বীকার করতে হবে, আমাদের অবদান ছাড়া তৃণমূল আসতে পারত না"।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানিয়েছেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। আমার ধারণা, বিরোধীরা একত্রিত হয়ে অশান্তি বাধিয়েছে। যত ভোট এগিয়ে আসবে, তত আমাদের দলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা চক্রান্ত করবে"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন