দল ছাড়লেও বামপন্থা ছাড়ছি না। স্পষ্ট জানালেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হাফিজ আলম সাইরানী। রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে দল থেকে ইস্তফা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। শুক্রবার ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে চার পাতার একটি ইস্তফা পত্র লিখেছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে বর্ষীয়ান নেতা জানান, "দলের অন্দরে একনায়কতন্ত্র প্রভাব ফেলেছে। দলে কোনও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। একক নেতৃত্ব যা বলে দেবে, সেটাই এখন পার্টির সিদ্ধান্ত। দেবব্রত বিশ্বাস বা নরেন চ্যাটার্জী যা বলবেন সেটাই কেন্দ্রীয় বা রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত। এর বিরুদ্ধে যদি কেউ মত প্রকাশ করে, তাঁকেও পার্টির থেকে ছেঁটে ফেলা হবে বা তাঁকে অপদস্ত করা হবে। এই প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলছে।"
আগামী দিনে নতুন কোনও দলে যোগ দেওয়ার প্রশ্নে হাফিজ স্পষ্ট জানিয়েছেন, এইরকম কোনও চিন্তাভাবনা এখনও পর্যন্ত আমার নেই। আগামীতেও বামফ্রন্টের মিছিল মিটিং-এ নিশ্চিতভাবে যোগদান করব। দলত্যাগ করলেও বামপন্থা ছাড়ছি না।
ফরওয়ার্ড ব্লকের সাথে থাকার জন্য শিক্ষকতা ছেড়ে দলের সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন হাফিজ। তবে, ইস্তফা পত্রে দলের প্রতি যথেষ্ট ক্ষোভ এবং হতাশা প্রকাশ করে পদত্যাগের মোট ১১টি কারণ উল্লেখ করতে দেখা গেছে তাঁকে।
বর্তমানে দলের বিভিন্ন নীতিবিরোধী কার্যকলাপ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম এবং নেতৃত্বের ভূমিকায় আমার মনে প্রশ্ন তৈরী হয়েছে। বহু কর্মীর মনেই একই প্রশ্নগুলি তৈরী হয়েছে। যার সদুত্তর আমি তাঁদের দিতে পারিনি।
প্রবীণ নেতার কথায়, ২০১৬-র পর থেকে রাজ্য তথা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। কেন্দ্রের মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতি এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির পাশাপাশি রাজ্যে দুর্নীতিগ্রস্ত, অগণতান্ত্রিক সরকার চলছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য নেতৃত্বের যে পরিকল্পনা, কর্মসূচী নেওয়া উচিত ছিল দল সেই ভূমিকা পালন করছে না।
তিনি আরও বলেন, নেতাজীর জন্মদিবস থেকে শুরু করে প্রবীণ নেতা অশোক ঘোষের জন্মশতবর্ষ, সব বিষয়েই তৃণমূল নেতৃত্বদের কর্মসূচীতে আনার প্রবণতা তৈরী হয়েছে। রাজ্য দপ্তরে কর্মীদের সামনে তৃণমূলের সাথে যোগাযোগের কথা দলের রাজ্য সম্পাদক প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন।
পাশাপাশি, তাঁকে অজ্ঞাত রেখে দল থেকে সুদীপ ব্যানার্জী এবং আলি ইমরান রামজ (ভিক্টর)-কে বহিঃস্কারের সিদ্ধান্তে যথেষ্ট হতাশ হাফিজ। এছাড়াও, দল গণসংগঠনগুলিকে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ তাঁর। তবে হাফিজ আলম সাইরানীর ইস্তফা পত্র দল গ্রহণ করেছে কিনা তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।