

গত ১ এপ্রিল সাইকেল র্যালির মাধ্যমে শুরু হয়েছে ঘাঘর ঘেরা আন্দোলন। পুরুলিয়া ঝালদার পাঁচ শহীদ মোড় থেকে খাতড়া ঝাড়গ্রাম খেমাশুলি হয়ে কোলকাতা CRI অফিস অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে। মূলত কুড়মি সমাজের তফশিলী উপজাতি স্বীকৃতির দাবিতে এই আন্দোলন চলছে।
ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুদীপ রায় মাহাতা পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে জানান, আজ ৭ এপ্রিল গিধনি থেকে সাইকেল র্যালি শুরু হয়েছে। এই র্যালি কলকাতা পর্যন্ত যাবে। মোট পাঁচটি সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে এই আন্দোলনের জন্য তৈরি হয়েছে ঘাঘরঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি।
তিনি আরও জানান, গত ৫ এপ্রিল কলাইকুন্ডাতে সরকারের সঙ্গে বৈঠক হয়। যেখানে জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা ছিলেন। সেখানে আমাদের ১০ জনের প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় দাবি না মিটলে আন্দোলন চলবে। ওইদিনের পর থেকে আমাদের অনেককে হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, আমাদের পিষে মেরে ফেলা হবে।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দাবি পূরণ না হলে, রবিবার থেকে পুরুলিয়া-রাঁচি রেলপথের কোটশিলা স্টেশন ও পুরুলিয়া-রাঁচি জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।
সংগঠনের বক্তব্য অনুসারে, ১৯৩১ সালে প্রিমিটিভ ট্রাইব এবং ১৯৩৬ সালের ব্যাকওয়ার্ড ট্রাইব তালিকা মিলিয়ে ১৯৫০ সালের এসটি তালিকা গঠিত হয়েছিল এবং কিছু জাতিকে রাজ্যপালের সুপারিশ অনুযায়ী তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৩১ সালের প্রিমিটিভ ট্রাইব তালিকায় টোটেমিক কুড়মি জাতির নাম থাকলেও ১৯৫০ সালের তালিকা থেকে সেই নাম বাদ দেওয়া হয়।
এই প্রসঙ্গে ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিকাশ চন্দ্র মাহাতো পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে জানান, শুক্রবার আমাদের সাইকেল মিছিল ৮ দিনে পড়েছে। ৩ দিন ধরে খেমাশুলিতে অবরোধ চলছে। ১৯৯৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে জানিয়েছিল টোটেমিক কুড়মি জাতিকে এসটি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হলে সাংবিধানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেই করতে হবে। অফিস অফ দ্য রেজিস্ট্রার জেনারেল অ্যান্ড সেন্সাস কমিশনার অফ ইন্ডিয়া (ORGI) রাজ্যের কাছ থেকে এই প্রসঙ্গে জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। আমাদের একটাই দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট দীর্ঘদিন আটকে রেখেছে তা অবিলম্বে মিনিস্ট্রি অফ ট্রাইবাল অ্যাফেয়ার্স-এর কাছে পাঠাতে হবে।
উল্লেখ্য, এই দাবিতে এর আগে গতবছরের ২০ সেপ্টেম্বর রাজ্যের খেমাশুলিতে ৬ দিন একটানা রেল অবরোধ করা হয়। সেই সময় রাজ্য সরকারের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হলেও পরবর্তী দীর্ঘ ৬ মাসে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ। সেই কারণেই এবার দীর্ঘ এবং অনির্দিষ্টকালীন আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ঘাঘরঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন