
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) প্রকাশিত দাগি অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, কমিশনকে নতুন করে বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তবে এর পাশাপাশি আদালত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই এসএসসি-র নয়া নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশেরও অনুমতি দিয়েছে।
বুধবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি এন ভি অঞ্জরিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানির সময়ে বেঞ্চের বক্তব্য, এসএসসি যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তা ‘অস্পষ্ট’ এবং পর্যাপ্ত তথ্যহীন। বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের পর্যবেক্ষণ, “তালিকায় বিষয়ভিত্তিক ও সংরক্ষণভিত্তিক তথ্য থাকা জরুরি"।
পাশাপাশি এসএসসির আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অযোগ্যদের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে সকলের নাম রয়েছে। এরপরেই বিচারপতি সঞ্জয়ের মন্তব্য, "কোনও কিছু গোপন রাখবেন না, বিস্তারিত ভাবে নতুন তালিকা প্রকাশ করুন। নচেৎ ভবিষ্যতে আবার এই নিয়োগ নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হতে পারে।”
এসএসসি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কমিশন আবার নতুন তালিকা প্রকাশ করবে। এই বিষয়ে মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে আগামী ২৪ নভেম্বর।
গত আগস্টের শেষ দিকে এসএসসি ১,৮০৬ জন প্রার্থীর নামসহ অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করেছিল। সুপ্রিম কোর্টের আগের নির্দেশ ছিল, যাঁরা ‘দাগি’ হিসাবে চিহ্নিত, তাঁদের যেন কোনও ভাবেই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া হয়। কমিশন সেই নির্দেশ মেনে তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড বাতিল করে। তবে প্রকাশিত তালিকায় কারও নাম বাদ পড়েছে কি না বা তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে কি না, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন ওঠে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে গত সেপ্টেম্বর মাসে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার আদালতে এসএসসি জানিয়েছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ফলপ্রকাশের চেষ্টা চলছে। আদালতও সেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, পুজোর পরেই এসএসসি-র ফলপ্রকাশ করবে কমিশন এবং নভেম্বরেই ইন্টারভিউ প্যানেল প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ উভয় স্তরের মডেল উত্তরপত্র আপলোড করা হয়েছে এবং উত্তর চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৫০০-রও বেশি পরীক্ষার্থী তাঁদের উত্তর চ্যালেঞ্জ করেছেন। এখন বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সঠিক উত্তর আপলোড করা হবে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে।
নয়া নিয়োগ পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। নবম-দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে আবেদন করেছিলেন ৩,১৯,৯৬১ জন, পরীক্ষায় বসেছেন ২,৯৩,১৯২ জন, যা ৯১.৬২ শতাংশ উপস্থিতি। এর মধ্যে ৩১,০০০-এরও বেশি প্রার্থী ভিন্রাজ্যের।
একাদশ-দ্বাদশ স্তরে আবেদন করেছেন ২,৪৬,৫৪৩ জন, পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ২,২৯,৪৯৭ জন, অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ উপস্থিতি। ভিন্রাজ্যের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সেখানে ১৪,৫১৭ জন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন