আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ট্রেনি মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য-সহ সারা দেশ। এই আবহে এবার পূর্ব বর্ধমানের ভাতাড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে মধ্যরাতে মত্ত অবস্থায় হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। এমনকি আর জি করের উদাহরণ টেনে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ২ টো নাগাদ মত্ত অবস্থায় চিকিৎসা করাতে আসেন এক সিভিক ভলেন্টিয়ার। সেই সময় কর্তব্যরত এক শিশু বিশেষজ্ঞকে হেনস্থা করেন তিনি বলে অভিযোগ ওঠে। ওই নির্যাতিতা চিকিৎসকের দাবি, ‘‘রাতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীদের ভিড় ছিল হাসপাতালে। তাঁদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তখন ওই সিভিক ভলান্টিয়ার আসেন। তিনি জানান, তাঁর পেটে ব্যথা হচ্ছে এবং মাথা ঘুরছে। আমি তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলাম। তবুও ওই সিভিক ভলেন্টিয়ার আমার সঙ্গে অযথা দুর্ব্যবহার করতে থাকেন। আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আরজি করে কি হয়েছে জানেন তো? আমি এখানেই করব।‘”
তৎক্ষণাৎ ওই মহিলা চিকিৎসক এই ঘটনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর শনিবার সকালে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের শাস্তির দাবিতে পোস্টার হাতে থানায় যান চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। পরে জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে। এরপর শনিবার ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট আর জি করের সেমিনার হল থেকে ট্রেনি চিকিৎসকের অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। মর্মান্তিক ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই মৃতের পরিবারের তরফ থেকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ তোলা হয়। কিন্তু পুলিশ প্রথমে তা খারিজ করে এই ঘটনাকে আত্মহত্যার চেহারা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা যায়, মৃতের শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতের চিহ্ন মিলেছে। পেটে, আঙুলে, ঠোঁটে, যৌনাঙ্গে ক্ষত রয়েছে। গলার হাড়ও ভেঙেছে। যৌন নির্যাতনের পর কোনও কিছু দিয়ে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় ওই চিকিৎসককে, এটা কার্যত স্পষ্ট। এই ঘটনায় এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, অপরাধ স্বীকার করেছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন