'সরকার কোচবিহারকে আলাদা রাজ্য করছে' - মমতার সঙ্গে অনুষ্ঠানের পরই বিস্ফোরক দাবি অনন্ত মহারাজের

তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ থেকে বঙ্গভঙ্গ করতে দেবেন না বলেছেন। আমরা তো বঙ্গকে ‘ভঙ্গ’ করতে চাইনি। আমরা কোচবিহারকে ‘রিফর্মেশন’ করতে চাই। কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের বাইরে। আমার কাছে প্রমাণ আছে। ’
অনন্ত মহারাজ
অনন্ত মহারাজফাইল ছবি

বুধবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে দাঁড়িয়ে 'বঙ্গভঙ্গ নয়' বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার, এই মঞ্চের আমন্ত্রিত ব্যক্তিই 'বঙ্গভঙ্গ'-এর ডাক দিলেন। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস আসোসিয়েশনের নেতা অনন্ত মহারাজ।

স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শিলিগুড়িতে এসেছিলেন অনন্ত মহারাজ। তারপর, অনুষ্ঠান মঞ্চ ছেড়েই কোচবিহারকে এরাজ্য থেকে আলাদা করার দাবি করেন তিনি।

বিচ্ছিন্নতাবাদী এই নেতা বলেন, 'কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নয়। কোচবিহার আলাদা। কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের বাইরে। আমার কাছে প্রমাণ আছে। এটা সরকারকে করতে হবে। আর সরকার এটাই করতে যাচ্ছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এদিন তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে ‘ইনভাইট’ করেছে। আমি তো ওঁর ডাকা বিজয়া সম্মিলনীতে অংশগ্রহণ করেছি মাত্র। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার সৌজন্যমূলক কথা হলো।’

মুখ্যমন্ত্রীর 'বঙ্গভঙ্গ নয়' মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ থেকে বঙ্গভঙ্গ করতে দেবেন না বলেছেন। আমরা তো বঙ্গকে ‘ভঙ্গ’ করতে চাইনি। আমরা কোচবিহারকে ‘রিফর্মেশন’ করতে চাই।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এখন চিন্তা করুন, কোচবিহার কোথায়, আর ওয়েস্ট বেঙ্গল কোথায়! জিওগ্রাফিক্যালি একটু দেখুন, তারপর বলুন।’ 

সাংবাদিকদের ঘেরাটোপ থেকে ছিটকে বের হয়ে যাওয়ার আগে অনস্ত মহারাজকে স্পষ্ট বলতে শোনা যায়, ‘ইন্ডিয়া গর্ভমেন্ট এটা করতে যাচ্ছে।’

অনন্ত মহারাজের এই দাবির পরই ফের আলাদা রাজ্য প্রসঙ্গ নিয়ে উত্তরবঙ্গ জুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস আসোসিয়েশন’-এর কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাদা রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করে বিভিন্ন পোস্ট করতে শুরু করে। 

এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়িতে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ধর্মেও আছেন, জিরাফেও আছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপের সমালোচনা করে সিপিআই(এম) নেতা বলেন, 'উনি বিচ্ছিন্নতাবাদী বংশীবদনকে কোলে টেনে নিয়েছেন, আরেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অনন্ত মহারাজের ডাকে তাঁর দলের বিশেষ অনুষ্ঠানে সরকারী কাজ ফেলে কোচবিহারে ছুটে আসছেন। উনি নিজের দলের ভোটবাক্সকে শক্তিশালী করতে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে পায়ের তলায় মাটি তৈরির সুযোগ করে দিয়েছেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির উথানের দায় মুখ্যমন্ত্রী এড়িয়ে যেতে পারেন না। এর আগে পাহাড়েও তিনি বিমল গুরুঙকে একবার কাছে টেনেছেন, আরেকবার দূরে ঠেলেছেন।

জীবেশ সরকার অভিযোগ করেন, 'আসলে মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পনামাফিক বন্ধু তৈরি করেন, আবার পরিকল্পনামাফিক বন্ধুত্যাগ করেন। সবই করেন নিজে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর এই ভূমিকার জন্যই রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বাড়বাড়ন্ত।'

অনন্ত মহারাজ
ফের বিপুল টাকার হদিশ! উল্টোডাঙ্গায় আমির ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর বাড়িতে উদ্ধার ১.৫ কোটি
অনন্ত মহারাজ
TET Scam: পিছনের দরজা দিয়ে চেয়ারম্যান পদে ঢুকেছেন - পর্ষদ সভাপতিকে তোপ সুজন চক্রবর্তীর

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in