
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় স্বস্তি পেলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ইডির পর এবার সিবিআই মামলাতেও তাঁকে জামিনের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে এখনই জেল মুক্তি হচ্ছে না রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর। আপাতত তাঁকে থাকতে হবে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারেই।
নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইডি এবং সিবিআই - উভয় কেন্দ্রীয় সংস্থা মামলা দায়ের করেছিল। এর আগে ইডি মামলায় শর্তসাপেক্ষ জামিন দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এবার সিবিআই মামলাতেও বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি এনকে সিংয়ের বেঞ্চ তাঁর শর্তসাপেক্ষ জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে শুধুমাত্র গ্রুপ সি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাতে জামিন দেওয়া হয়েছে। এখনও তাঁর বিরুদ্ধে গ্রুপ ডি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা চলছে। তাই জামিন পেলেও এখনই জেলমুক্তি হচ্ছে না পার্থর।
২০২২ সালে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ। একই মামলায় ইডির পর সিবিআই-ও গ্রেফতার করে পার্থকে। একাধিকবার জামিনের আর্জি জানালেও তা খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘদিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি সিবিআই। সোমবার শীর্ষ আদালতে এই প্রসঙ্গ তুলে সওয়াল করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। যদিও এর বিরোধিতা করেছেন সিবিআই-এর আইনজীবী। তবে শীর্ষ আদালত প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করে।
অন্যদিকে, এদিন পার্থ ছাড়াও জামিন পেলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা এসএসসি প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য এবং এসএসসি প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা। সুবীরেশ ভট্টাচার্যের পক্ষে এদিন আদালতের সওয়াল করেন সিদ্ধার্থ মৃদুল। তাঁর বক্তব্য, "তিন বছরের বেশি সময় ধরে হেফাজতে সুবীরেশ। এখনো চার্জ গঠন হয়নি, কারণ অনুমোদন মেলেনি।" যদিও সিবিআই-এর পক্ষের আইনজীবী এএসজি এসভি রাজুর বক্তব্য, "এটি খুবই গুরুতর মামলা"। এরপরেই বিচারপতি সুন্দরেশ প্রশ্ন তোলেন, "আমরা কাউকে শাস্তি দিতে চাই না। কিন্তু এতদিন ধরে ভিতরে কেন?"
রাজুর দাবি, দেরির জন্য সিবিআই দায়ী নয়, বরং অভিযুক্তদের পক্ষই সময়ক্ষেপণ করছে। তিনি আরও জানান, শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষা দুর্নীতির মামলায় বহু অযোগ্য মানুষকে টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। মৃদুল আদালতে আশ্বাস দেন- "আমরা আদালতের যে কোনও শর্ত মানতে রাজি।" আদালতের নির্দেশ, তিন বছর ধরে কারাবন্দি অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে চার সপ্তাহের মধ্যে চার্জগঠন করতে হবে এবং পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের জেরা সম্পন্ন করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন