
“ভুটানের জলেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত!” উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এমন মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পায়ে হেঁটে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। ত্রাণসামগ্রী বিলি করেন তিনি। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারের একজনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন মমতা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বামনডাঙায় সাতজনের হাতে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, যাঁরা দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে ইতিমধ্যেই ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া, যাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্তদের শস্য বিমার টাকা প্রদান করা হবে। যাঁদের নথিপত্র জলে নষ্ট বা হারিয়ে গিয়েছে, তাঁদের জন্য বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজনের কথাও ঘোষণা করেন তিনি। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজের ডুপ্লিকেট নথি তৈরি করে দেবে সরকার।
এরপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে বলছি, ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন গড়া হোক এবং তার সদস্য করা হোক বাংলাকে। ভুটানের জলেই এত বড় ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই, ওরা ক্ষতিপূরণ দিক। সবটাই তো আমাদের করতে হয়। দিল্লি এক পয়সাও দেয় না।”
তিনি আরও জানান, রাজ্যের চাপের পরেই আগামী ১৬ অক্টোবর কেন্দ্র এ বিষয়ে একটি বৈঠক ডেকেছে। সেখানে রাজ্যের এক আধিকারিক অংশ নেবেন। যদিও বৈঠকে ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হবে, তা মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেননি।
রবিবার আলিপুরদুয়ারের হাসিমারায় পৌঁছে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক, পূর্ত দফতরের সচিব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ও স্থানীয় বিধায়কেরা উপস্থিত ছিলেন। জীবন বাজি রেখে যাঁরা মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন, সেই আট সিভিল ডিফেন্স কর্মী, বনরক্ষী, ভিলেজ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারকে পুরস্কৃত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার সকালে নাগরাকাটায় গিয়ে বামনডাঙা এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের জন্য লোহার একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পরিদর্শন শেষে রাতে শিলিগুড়িতে ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার মিরিকের দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখবেন এবং দার্জিলিঙে গিয়ে এক দিনের প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। সেখান থেকে শুক্রবার কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে তাঁর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন