
আরজি কর কাণ্ডে কুণাল ঘোষের ‘বয়কট তত্ত্ব’ কার্যত আবারও খারিজ করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের পুরানো অবস্থাতেই অনড় রইলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বুধবার তিনি ফের জানান, তৃণমূল বয়কটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়।
আরজি কর কাণ্ডে যে সমস্ত শিল্পীরা রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন, তাঁদের তৃণমূলের আয়োজিত অনুষ্ঠানে বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। কিন্তু কুণালের সেই বয়কটের ডাক কার্যত খারিজ করে দিয়েছিলেন অভিষেক। তাঁর লোকসভা কেন্দ্র ডায়মণ্ড হারবারে ‘সেবাশ্রয়’ কমর্সূচির সুচনায় গিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, তৃণমূল বয়কটের রাজনীতি করে না। এদিনও একই দাবি করলেন অভিষেক।
বুধবার নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মণ্ড হারবার থেকে কুণালকে কার্যত খোঁচা দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘আমি যত দূর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনি, তিনি বয়কট, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও-এর রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। যদি করতেন, তা হলে এক সময়ে যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন, তাঁরা দলে ফিরতে পারতেন না’।
উল্লেখ্য, সারদা মামলায় জেলে থাকাকালীন নিয়ম করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতেন কুণাল ঘোষ। সেসময় প্রিজন ভ্যান থেকে কুণালকে এও বলতে শোনা যায়, ‘মমতা সারদার সব থেকে বড় বেনিফিশিয়ারি (সুবিধাভোগী)। যান, গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অ্যারেস্ট (গ্রেফতার) করুন!’ আজকের অভিষেকের বক্তব্যের পরে অনেকেই মনে করছেন কুণালকে সেই প্রসঙ্গ তুলেই খোঁচা দিলেন অভিষেক। যদিও কুণাল ঘোষ পাল্টা জানিয়েছেন - অভিষেক তাঁকে উদ্দেশ্য করে কিছুই বলেননি।
অন্যদিকে, তৃণমূল থেকে সদ্য সাসপেন্ড করা হয়েছে শান্তনু সেন এবং আরাবুল ইসলামকে। বুধবার এ বিষয়ে অভিষেক বলেন, “দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর উপরে আমার আর কী পর্যবেক্ষণ থাকতে পারে?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আপনাদের মনে থাকবে, এর আগেও আরাবুল ইসলামকে সাসপেন্ড করেছিল দল। আরাবুল, শম্ভুনাথ কাউকে গ্রেফতার করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই। এই নামগুলো নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে?’’
দল থেকেও সাসপেন্ড হলেও শান্তনু সেন কী সেবাশ্রয়ে থাকছেন? এই প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, ‘‘শান্তনু সেন এক জন চিকিৎসক। তিনি কোন ক্যাম্পে থাকবেন, পাড়ায় ক’টা রোগী দেখবেন, সেটা তাঁর বিষয়। ব্যক্তিগতভাবে তো তিনি আরও পাঁচটা কাজে যুক্ত থাকতেই পারেন। এতে আমার কী বলার আছে?”
উল্লেখ্য, শান্তনু সেনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেবাশ্রয় কর্মসূচিতে ১৫০০ চিকিৎসককে এক জায়গায় এনেছিলেন। এদিন অভিষেকের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, নেতা হিসাবে শান্তনু প্রসঙ্গে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও চিকিৎসক শান্তনু সেনের পাশেই আছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন