
২২ দিনের প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে বাংলাদেশ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হল মালদা জেলার কালিয়াচকের জালালপুরের বাসিন্দা আমির শেখকে। বুধবার সন্ধ্যায় বসিরহাট থানা থেকে আমিরকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ। দীর্ঘ অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দেশে ফিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে আমির ও তাঁর পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ধন্যবাদ জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
এদিন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ এবং রাজ্য পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম আমিরের দেশে ফেরার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন। তিনি জানান, এই পদক্ষেপের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বড় ভূমিকা রয়েছে। তিনি লেখেন, "মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে নবান্ন সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করেছে। তার ফলেই আজ আমির নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছে"। বাংলাদেশে 'পুশব্যাক' হওয়ার পর আমিরের বাড়ির তরফে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সাংসদের দাবি, তার জেরেই কেন্দ্র সরকার তড়িঘড়ি আমিরকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে।
বাংলায় কথা বলায় বাংলাদেশী সন্দেহে আমিরকে আটক করেছিল রাজস্থান পুলিশ। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে রাজস্থান পুলিশ আমিরকে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। অভিযোগ, এরপরেই সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাঁকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে। এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি তাঁর পরিবারের সদস্যদের কিছু জানানোও হয়নি বলে অভিযোগ। বাংলাদেশের একটি দোকানে ক্রন্দনরত আমিরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যা দেখে তাঁকে শনাক্ত করে তাঁর পরিবার। পরিবারের বক্তব্য, বিনা দোষে আমিরকে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছিল, যা মানসিকভাবে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশে পুশব্যাকের পর থেকেই আমিরকে দেশে ফেরানোর জন্য প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার থেকেই ফেরানোর প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। মালদা দক্ষিণের কংগ্রেস সংসদ ঈশা খান চৌধুরী জানান, বিএসএফের তরফ থেকে তাঁকে ফোন করে অবহিত করা হয়েছিল তাঁর লোকসভা এলাকার এক বাসিন্দাকে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে।
দেশে ফেরার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আমির ও তাঁর পরিবার। পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এতদিন ধরে তাঁরা দুশ্চিন্তায় এবং আতঙ্কে ছিলেন। আমির দেশে ফেরায় অবশেষে শান্তি ফিরেছে।
যদিও এই ঘটনা সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নাগরিক অধিকার এবং প্রশাসনিক সমন্বয়ের ক্ষেত্রে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। প্রশাসনিক মহলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ও তদন্তের দাবি উঠেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন