

মঙ্গলবার থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)। আর এই আবহে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের একটি মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে ফিরহাদকে বলতে শোনা গেছে, "রাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) বাস্তবায়নে কোনও অসঙ্গতি থাকলে নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপির পা ভেঙে দেওয়া হবে!"
রাজ্যে এসআইআর শুরু হওয়ার ঘোষণার পর পর সর্বদলীয় বৈঠক করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। সেই বৈঠকের শেষে ফিরহাদকে বলতে শোনা যায়, “যদি একজনও প্রকৃত ভোটারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে, আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। কোনও প্রকৃত ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দিতে দেব না।” পাশাপাশি সিএএ-র নামে খোলা শিবির নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি জানান, যদি এসব কার্যক্রম সরকারি বা অন্য কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ হয়, তাহলে তারা তা সহ্য করবে না।
ফিরহাদের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে বিজেপি। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রদীপ ভাণ্ডারি একে 'সাংবিধানিক সংস্থাকে উস্কানি' হিসেবে অ্যাখায়িত করেছেন। সমাজ মাধ্যমে তিনি লেখেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডান হাত ববি হাকিম বলেছেন: 'আমরা নির্বাচন কমিশনের পা ভেঙে দেব এসআইআর-এর জন্য!' সাংবিধানিক সংস্থাকে খোলা হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল! অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করার জন্য তৃণমূল সহিংসতা উস্কে দিচ্ছে!"
তিনি আরও বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগেও দাঙ্গার বিষয় উস্কে দিয়েছিলেন! তৃণমূল কি বাংলায় ভোট ব্যাংক একত্রীকরণের জন্য রাজ্য পৃষ্ঠপোষকতায় সহিংসতার পরিকল্পনা করছে?"
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পাশ হওয়া সিএএ অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টানদের স্থায়ীভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী আগেই ঘোষণা করেছেন, যদি প্রবিধান বা নিয়মকানুন কোনওভাবে মানুষকে বৈষম্যের শিকার করে, তিনি তা প্রতিহত করবেন।
সোমবার নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে, নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর হবে। যার মধ্যে রয়েছে: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লক্ষদ্বীপ, ছত্তিশগড়, গোয়া, গুজরাট, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরি, রাজস্থান, তামিলনাডু, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন