West Bengal: আর্থিক সংকটে প্রস্তাবিত 'লক্ষ্মী ভান্ডার' প্রকল্প - কমতে পারে প্রাপকের সংখ্যা

সরকারি সূত্র অনুসারে, রাজ্যের বর্তমান আর্থিক অবস্থায় প্রায় আড়াই কোটি পরিবারকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা কার্যত অসম্ভব। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তিতে কিছু মাপকাঠি করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন 'লক্ষ্মী ভান্ডার' প্রকল্পের। যে প্রকল্প অনুসারে তপশীলি জাতি এবং তপশীলি উপজাতি পরিবারের মহিলাদের মাসে ১ হাজার টাকা করে এবং অন্যান্য মহিলাদের মাসিক ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। যদিও জানা যাচ্ছে রাজ্যের আর্থিক অবস্থার কারণে সবাইকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবেনা।

সরকারি আধিকারিকদের সূত্র অনুসারে, রাজ্যের বর্তমান আর্থিক অবস্থায় প্রায় আড়াই কোটি পরিবারকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা কার্যত অসম্ভব। সেই কারণে সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কিছু মাপকাঠি তৈরি করা হচ্ছে। যে মাপকাঠিতে বিচার করা হবে পরিবারের আয়। সাম্প্রতিক এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি কিন্তু অর্থ দপ্তরের আধিকারিকরা নিশ্চিত যে সমস্ত পরিবারকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে না।

রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য অনুসারে, এই প্রকল্প আগামী ১ জুলাই থেকে চালু হবার কথা। যদি আড়াই কোটি পরিবারকে এই প্রকল্পের সুবিধা দিতে হয় সেক্ষেত্রে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। যা রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির ওপর খুবই চাপ সৃষ্টি করবে। তাই প্রাথমিক ভাবে ১.৬ কোটি পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে এবং এর জন্য সরকারের বছরে খরচ হবে ১১ হাজার কোটি টাকা। বাকি পরিবারের কথা পরে ভাবা হবে।

রাজ্যের মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী সম্প্রতি হওয়া এক বৈঠকে এই ধরণের ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অর্থ দপ্তরের এক আধিকারিক। তিনি জানান, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা অনুসারে সবুজ সাথী অথবা বার্ধক্য ভাতার মত প্রকল্প যেরকম সকলের জন্য চলে এই প্রকল্প সকলের জন্য চালানো সম্ভব নয়। আড়াই কোটি পরিবারকে এই সাহায্য দিতে গেলে বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা লাগবে, যা এই মুহূর্তে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

এছাড়াও এই প্রকল্পে আর্থিক যোগানের জন্য রাজ্য সরকারের কিছু দপ্তরে খরচে নিয়ন্ত্রণ আনা হতে পারে বলেও জানা গেছে। যদিও সমস্ত দপ্তরে খরচ নিয়ন্ত্রণ করা যেহেতু সম্ভব নয় তাই অন্য কোনো ভাবেও এই প্রকল্পের জন্য অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা চলছে। সরকারি আধিকারিকদের সূত্র অনুসারে, সরকার ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের আওতায় কারা আসবেন তার এক প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করেছেন যাতে আপাতত প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেওয়া যায়।

উদাহরণ হিসেবে জানানো হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় সরকারের কাছে প্রায় ৩৩ লক্ষ মহিলা প্রাপকের বিস্তারিত তালিকা আছে। যা দিয়ে আপাতত প্রকল্পের কাজ শুরু করা যেতে পারে। বাকি পরিবারগুলোর ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে আবেদন চাওয়া হতে পারে। ওই সূত্র অনুসারে, প্রতিবছর ১১ হাজার কোটি টাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ঢুকলে তা অবশ্যই রাজ্যের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থাকে চাঙ্গা করবে।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in