SSC: ‘অযোগ্য’ তালিকা প্রকাশ না করেই শিক্ষাকর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি! ফের আইনি জটের আশঙ্কায় চাকরিহারারা

People's Reporter: ২০১৬ সালের নিয়োগ বাতিলের ফলে চাকরি হারান ১৫,৪০৪ জন শিক্ষক ও ১০,৩৪৮ জন স্কুলকর্মী। পরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশে জানিয়ে দেয়, মোট ৩,৩৯৪ জন গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মী ‘যোগ্য’, বাকিরা নয়।
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি - সংগৃহীত
Published on

বৃহস্পতিবার নতুন করে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল এসএসসি। তবে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ফের উদ্বেগ ছড়িয়েছে ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রাপ্ত, বর্তমানে চাকরিহারা গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মীদের মধ্যে। তাঁদের আশঙ্কা, কমিশনের তরফে এখনও ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। তাই এই নতুন নিয়োগও আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়তে পারে।

২০১৬ সালের নিয়োগ বাতিলের ফলে চাকরি হারান ১৫,৪০৪ জন শিক্ষক ও ১০,৩৪৮ জন শিক্ষাকর্মী। পরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশে জানিয়ে দেয়, মোট ৩,৩৯৪ জন গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মী ‘যোগ্য’, বাকিরা নয়। এর মধ্যে গ্রুপ-সি তে ১,২৫৫ জন এবং গ্রুপ-ডি তে ২,১৩৯ জন ‘যোগ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পান। বাকি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ওঠে নানা অনিয়মের অভিযোগ - ওএমআর শিটে কারচুপি, প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাওয়া ইত্যাদি।

আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’দের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করার জন্য। গত সেপ্টেম্বরে ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করলেও, এসএসসি এখনও শিক্ষাকর্মীদের তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। এমন অবস্থায় নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় নতুন করে বিতর্ক উসকে উঠেছে।

চাকরিহারা গ্রুপ-সি কর্মী অমিত মণ্ডলের বক্তব্য, “তালিকা স্পষ্ট না করে আবেদন গ্রহণ করা অনুচিত। আগে জানাতে হবে কে যোগ্য, কে নয়। সাত মাস ধরে আমরা বেতন পাচ্ছি না, এখন আবার পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।” তাঁর আশঙ্কা, তালিকা প্রকাশে দেরি হলে ফের আদালতে মামলা হবে, এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া আবার স্থগিত হতে পারে।

এদিকে গ্রুপ-ডি কর্মী সুব্রত সিকদার বলেন, “সরকার প্রথম থেকেই যোগ্য-অযোগ্যদের মিশিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। এর ফলে নিয়োগ নয়, আইনি জটিলতাই বাড়বে।”

প্রসঙ্গত, গত মে মাসে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল, চাকরিহারা গ্রুপ-সি কর্মীরা মাসে ২০ হাজার এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরা ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। কিন্তু ‘ওয়েটিং লিস্ট’-এ থাকা প্রার্থীরা সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন আদালতে। হাইকোর্ট ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেয়, যতক্ষণ না যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা স্পষ্ট হয়।

বৃহস্পতিবার এসএসসি-র জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গ্রুপ-সিতে ২,৯৮৯টি এবং গ্রুপ-ডিতে ৫,৪৮৮টি পদে নিয়োগ হবে। আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হবে ৩ নভেম্বর থেকে এবং চলবে ৩ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ২০১৬ সালের পর এই প্রথম এত বড় পরিসরে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে গ্রুপ-সি ও ডি পদের জন্য প্রায় ১৮ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছিল। এবার দীর্ঘ বিরতির পর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় আবেদনকারীর সংখ্যা ২৫ লক্ষ ছুঁতে পারে বলে ধারণা।

তবে এসএসসি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। কেবল এক কর্তা জানিয়েছেন, “সব কিছুই আইনের পথ মেনেই হবে।”

কিন্তু চাকরিহারাদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে—‘যোগ্য’-‘অযোগ্য’ তালিকার অস্পষ্টতা যদি বজায় থাকে, তাহলে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াও শেষমেশ আদালতের দরজায় গিয়ে থেমে যেতে পারে।

প্রতীকী ছবি
Kolkata: নিউ টাউনের বিশ্ববিদ্যালয়ে সিকিমের পড়ুয়াদের জাত তুলে কটূক্তি ও মারধরের অভিযোগ! তদন্তে পুলিশ

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in