
জাতপাত তুলে কটূক্তি এবং শারীরিক হেনস্থার শিকার সিকিম থেকে কলকাতায় পড়তে আসা পাঁচ পড়ুয়া! টাইম্স অফ ইন্ডিয়া-র প্রতিবেদন অনুসারে, ঘটনাটি ঘটেছে নিউটাউনের অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আতঙ্কিত ওই পাঁচ পড়ুয়া ইতিমধ্যেই সিকিমে ফিরে গেছেন। এদিকে তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সুরক্ষা আইনের আওতায় বিধাননগরের টেকনো সিটি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, নির্যাতিত ওই পাঁচ পড়ুয়া আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। সকলেই প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় অভিযোগকারীরা কোথায় ছিলেন, তা খতিয়ে দেখতে সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। এছাড়া খতিয়ে দেখা হচ্ছে রেজিস্টারের খাতা। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে বলে খবর। তদন্তভার এক সিনিয়র আধিকারিকের হাতে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে গিয়েছিলেন। সেই সময় কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র তাঁদের বাধা দেন। অভিযোগ, ওই সিনিয়ররা তাঁদের জাত তুলে অপমানজনক মন্তব্য করেন। তাঁদের মাঠের বদলে জঙ্গলে খেলতে যেতে বলা হয়। এর প্রতিবাদ করায় শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয় তাঁদের। নির্যাতিতরা জানিয়েছেন, কর্মীরা হস্তক্ষেপ করার আগেই প্রায় ২৫ জন সিনিয়র ছাত্র তাঁদের উপর হামলা চালান।
ঘটনার পর প্রাণভয়ে পাঁচ পড়ুয়া সোজা সিকিমে ফিরে যান এবং স্থানীয় থানায় বিষয়টি জানান। সেখানেই ‘জিরো এফআইআর’ রুজু করে তা পাঠানো হয় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে। বর্তমানে মামলাটি টেকনো সিটি থানার অধীনে তদন্তাধীন।
অভিযোগে এক ছাত্র লিখেছেন, "আমরা যখন মাঠ থেকে চলে আসছিলাম তখনও তারা চিৎকার করে বলেছিল যে তারা আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে মিথ্যা মামলা দায়ের করে আদিবাসীদের শিক্ষা দেবে এবং তারপর আমাদের মেরে ফেলবে। আমরা প্রাণ ভয়ে পরের দিনই কলকাতা থেকে পালিয়ে বাড়ি ফিরে আসি।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অমৃতা সাহা জানিয়েছেন, “ঘটনার সূচনা ক্যাম্পাসের বাইরে হলেও পরবর্তীতে তার প্রভাব ক্যাম্পাসের মধ্যেও পড়ে। আমরা ঘটনার পরদিনই একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশকে তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারীদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোনও পক্ষের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন