
পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর অফিসে তল্লাশি অভিযান ইডি-র। শুক্রবার সকালে সল্টলেক সেক্টর ওয়ানের ভবনে সুজিত বসুর অফিসে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। মোট কলকাতার ১০টি জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। পুর দুর্নীতির পাশাপাশি ব্যাঙ্ক প্রতারণার একটি মামলাতেও চলছে তল্লাশি।
শুক্রবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় চলছে তল্লাশি। সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। প্রথমেই ইডির একটি দল যায় নাগেরবাজার এলাকায়। ইডি সূত্রে খবর, দক্ষিণ দমদম পুরসভার উপপৌরপ্রধান তথা নাগেরবাজার এলাকার কাউন্সিলর নিতাই দত্তের বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। জানা গেছে, এই নিতাই দত্ত সুজিত বসুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া ঠনঠনিয়ার একটি বাড়িতে, শরৎ বোস রোড এবং নিউ আলিপুরের কিছু অফিসে হানা দিয়েছেন ইডি আধিকারিকেরা।
এর আগে, ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সুজিত বসুর লেকটাউনের দুটি বাড়ি ও দফতরে ১৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। তল্লাশি শেষে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও মন্ত্রীর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ইডি আধিকারিকেরা যাওয়ার পর সেবার সুজিত বসু সাংবাদিকদের সম্মুখীন হয়ে বলেছিলেন, “যদি কাজের জন্য কেউ সুজিতকে এক টাকা দিয়ে থাকেন, সুজিত আজই মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র দেবে।”
এসএসসি দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে পুর নিয়োগ দুর্নীতির সূত্র মেলে। এই মামলায় ব্যবসায়ী অয়ন শীল-কে প্রথমে গ্রেফতার করে সিবিআই। অয়নের সংস্থাই পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআর শিটের দায়িত্বে ছিল। তাঁর সল্টলেকের অফিস থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু উত্তরপত্র ও ওএমআর শিট। যেগুলি পুর নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এরপরেই এই মামলায় আর্থিক লেনদেনের বিষয় খতিয়ে দেখতে তদন্তে নামে ইডি।
গত বছর এই মামলায় প্রথম চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সিবিআইয়ের চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, অয়নের দুই এজেন্টের মাধ্যমে ১৬টি পুরসভায় অনিয়মিতভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে কমিশন নেওয়া হয়। চার্জশিটে শমীক চৌধুরী নামে এক এজেন্টের কথা জানায় সিবিআই। পরে এই আর্থিক দিকের তদন্তে নামে ইডি, আর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে সামনে আসে মন্ত্রী সুজিত বসুর নাম।
ইডি সূত্রে খবর, পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে একাধিক রাজনৈতিক প্রভাবশালীর আত্মীয়-পরিচিতদেরও চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি এক রাজনৈতিক নেতার পুত্রও বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন