মিড ডে মিলের টাকায় ভোট কর্মীদের ভাতা! সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল স্ক্রিনশট, অস্বীকার কমিশনের

কমিশনের তরফ থেকে আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোন অফিসার কত ভাতা পাবেন, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই ব্যাংক থেকে সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ঢোকার বার্তা আসার পর সকলে অনুমান করেছেন এটা ভোটকর্মী হিসেবে পাওয়া ভাতা।
ব্যাংক থেকে আসা মেসেজের স্ক্রিনশট (ডানদিকে)
ব্যাংক থেকে আসা মেসেজের স্ক্রিনশট (ডানদিকে)
Published on

ভোট কর্মীদের ভাতা দিতে মিড ডে মিল প্রকল্পের টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে! রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলো সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন - সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই ঘটনাকে যান্ত্রিক ত্রুটি বলে উল্লেখ করেছে কমিশন।

বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়, যেখানে ব্যাংক থেকে আসা একটি বার্তার উল্লেখ রয়েছে। মিড ডে মিল প্রকল্প থেকে টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার উল্লেখ রয়েছে ওই বার্তায়। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণের পর ভোটকর্মীদের মোবাইলে এই বার্তা এসেছে। ভোটকর্মী হিসেবে যে পরিমাণ টাকা তাঁদের পাওয়ার কথা সেই টাকাই পাঠানোর উল্লেখ রয়েছে ওই বার্তায়। বার্তাতে উল্লেখ রয়েছে এই টাকা মিড-ডে মিল প্রকল্প থেকে দেওয়া হয়েছে। (এই স্ক্রিনশটের সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস্ রিপোর্টার।)

মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় এরকম দুটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। এই ঘটনাকে একটি বড় দুর্নীতি হিসেবে মনে করছেন তিনি। তিনি লেখেন, “ভোটকর্মীদের ভাতা দিতেও মিড-ডে-মিলের ফাণ্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশুদের মুখের পুষ্টিকর খাবারের টাকা মেরে যারা ভোটকর্মীদের ভাতা প্রদান করেন তাদের জন্য একরাশ ধিক্কার! দরকার হলে আমি বিনা টাকাতেই কাজ করতে রাজি কিন্তু আমার ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টির টাকায় আমার পারিশ্রমিক দেওয়া হোক এটা চাই না‌। এটা একটা বড়ো দুর্নীতি বলেই মনে করি।“

একই দাবি মঞ্চের আর এক নেতা নির্ঝর কুণ্ডুর। তিনি বলেন, “কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী থার্ড পোলিং অফিসার হিসেবে আমার ১৫২০ টাকা পাওয়ার কথা। ব্যাঙ্ক থেকে যে-বার্তা এসেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, টাকাটা মিড-ডে মিল প্রোগ্রাম থেকে দেওয়া হচ্ছে। নেব না ওই টাকা। বিনা পয়সায় কাজ করব দরকার হলে। কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাব।“

তাঁর আরও প্রশ্ন, মেসেজের কোথাও নির্বাচন কমিশনের নাম উল্লেখ নেই। এই টাকা যে নির্বাচন কমিশন থেকে আসছে তার নিশ্চয়তা কোথায়?

উল্লেখ্য, কমিশনের তরফ থেকে আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোন পোলিং অফিসার কত ভাতা পাবেন, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই ব্যাংক থেকে সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ঢোকার বার্তা আসার পর সকলে অনুমান করেছেন এটা ভোট কর্মী হিসেবে পাওয়া ভাতা।

নির্বাচন কমিশন অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কমিশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তবে এটা কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটি বলে মনে করছেন তিনি। আবার ভুয়োও হতে পারে, কমিশনকে ফাঁসাতে এমনটা করা হতে পারেও দাবি করেছেন তিনি।

তিনি জানিয়েছেন, তহবিল আগে এসে গিয়েছে। সেখান থেকেই ভোটকর্মীদের টাকা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, এবার অনেক জায়গায় ভোট কর্মীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই ভাতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সহ একাধিক জায়গায় এমন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা ভোটকর্মীদের হাতে ভাতা তুলে দিয়েছেন।

তবে মিড ডে মিলের টাকা অন্য খাতে ব্যবহারের এই অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগে বীরভূমের বগটুই-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকাও মিড-ডে মিল প্রকল্প থেকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যদিও সেই অভিযোগও মিথ্যা বলে দাবি করেছিল শিক্ষা দফতর।

ব্যাংক থেকে আসা মেসেজের স্ক্রিনশট (ডানদিকে)
প্রতি বুথে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে ৫০:৫০ হারে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ হাইকোর্টের

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in