
জল্পনা ছিল বহুদিন ধরেই। সেই মতো তৃণমূলের উত্তর কলকাতার সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বস্তুত উত্তর কলকাতার সভাপতি পদটাই তুলে দেওয়া হয়েছে। একই বিষয় করা হয়েছে বীরভুম জেলার ক্ষেত্রেও।
শুক্রবার শাসক দলের তরফ থেকে সাংগঠনিক রদবদলের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী, সুদীপকে উত্তর কলকাতা জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এছাড়া সংগঠন পরিচালনা করবে ৯ জনের কোর কমিটি। সেই কমিটিতে রয়েছেন - বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল, মানিকতলার বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে, কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক তথা কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, চৌরঙ্গির বিধায়ক তথা সুদীপের স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামপুকুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, জোড়াসাঁকোর বিধায়ক বিবেক গুপ্ত। রয়েছেন স্বর্ণকমল সাহা, জীবন সাহা এবং স্বপন সমাদ্দার।
বহুদিন ধরেই সুদীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সারাবছর সাংগঠনিক কাজে থাকেন না। এমনকি দলের কঠিন সময়ে তাঁকে পাওয়া যায় না। তবে সভাপতি পদ থেকে সুদীপকে সরানো নিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, সাংসদ হওয়ার পর দিল্লিতেই বেশি সময় তাঁকে দিতে হচ্ছে। অনেকে আবার অসুস্থতাকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে অনেকের বক্তব্য, আরজি কর পর্বে দলের সাথে দুরত্ব বজায় রাখার কারণে তাঁকে আর জেলা সভাপতি পদে রাখা হল না।
তবে সেই কোর কমিটিতে নাম নেই সুদীপ বিরোধী কুণাল ঘোষের। যা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এব্যাপারে কুণাল কিছু না জানালেও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, কুণাল রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। তাঁকে কোর কমিটিতে রাখা হলে পদের অবনমন হবে। তবে সুদীপকে সভাপতি পদ থেকে সরানোয় কুণাল শিবিরের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে।
এর আগে গত রবিবার উত্তর কলকাতার একটি রক্তদান শিবিরে যোগ দিয়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, "অনেকে আমায় জিজ্ঞাসা করছেন, দাদা রদবদলের কী হবে? ছাত্র-যুব সংগঠনে কী হবে? আমি তাঁদের বলছি, কোথায় কী হবে জানি না, তবে উত্তর কলকাতায় আমি যা বলব তা-ই হবে"।
উল্লেখ্য, এর আগে একবার সুদীপকে উত্তর কলকাতার বিধায়ক পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে তাপস রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সুদীপ আর্জি করেন পদ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। মমতাই বিষয়টি প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। তাপস রায় পরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন