
সম্প্রতি প্রকাশ্যেই তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাকের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। এককথায় দলের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছিলেন তিনি। তাঁর এহেন মন্তব্যের জেরে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। অবশেষে সোমবার সন্ধ্যার পর নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে চিঠি লিখলেন মদন।
মদন চিঠিতে জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে বলা তাঁর কিছু মন্তব্য দলের ক্ষতি করেছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মর্মাহত হয়েছেন। সুব্রত বক্সীর উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, “দলকে অনুরোধ করছি আমায় ভুল না বুঝে ক্ষমা করার জন্য”। এমনকি এক সংবাদমাধ্যমে তিনি চিঠি লেখার কথাও স্বীকার করে জানিয়েছেন, তাঁকে কেউ কিছু বলেননি। তাঁর মনে হয়েছে, তাই অনুতপ্ত হয়ে চিঠি দিয়েছেন।
বিতর্কের সূত্রপাত সোমবারই। এদিন এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তৃণমূলের প্রবীণ নেতা বলেন, “আমাদের পার্টিতে টাকাপয়সার লেনদেন আগে ছিল না। এই একটা এজেন্সি আমাদের পার্টিতে ঢুকল। তারা এ সব শুরু করল”। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ধাক্কা খাওয়ার পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল নিয়োগ করেছিল আইপ্যাক-কে। সেই সময় এই সংস্থার শীর্ষে ছিলেন প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। সে বারের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছিল তৃণমূল, এর জন্য আইপ্যাকের ভূমিকার কথা বলেন অনেকেই।
এবার সেই আইপ্যাকের বিরুদ্ধে সরাসরি তোলাবাজির অভিযোগ করলেন মদন মিত্র। কামারহাটির বিধায়কের দাবি, “২০২১ সালের আগে এ সব শুরু হয়েছিল। টাকা নিয়েও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। লোককে কাঁদতে দেখেছি”। মদন জানান, “কেউ ২৫ লক্ষ, কেউ ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন এই এজেন্সির ছেলেদের। কিন্তু তার পরও মনোনয়ন পাননি। লজ্জায় কাউকে বলতেও পারছেন না। আর এর কোনও প্রমাণও নেই। কারণ পুরোটাই নগদে লেনদেন হয়েছে”।
প্রসঙ্গত, এই আইপ্যাক সমন্বয় রেখে চলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের সঙ্গে। তবে অভিষেকের দপ্তর থেকে কি কোনও ইঙ্গিত পেয়েছেন বিধায়ক? যদিও এর উত্তরে মদন বলেন, “অভিষেকের বিষয়ে আমার হাতে কোনও তথ্য নেই। তাই সরাসরি ওঁর নাম আমি বলতে পারি না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও দুর্নাম ছিল না। যেটুকু কালি লেগেছে, তা প্যাকওয়ালাদের জন্য”।
অন্যদিকে, মদন মিত্রের আইপ্যাক নিয়ে এই মন্তব্যে দলের তরফ থেকেও দুরকমের মত এসেছে। কুণাল ঘোষের দাবি, মদন মিত্র সিনিয়র নেতা। তিনি যেটা বলছেন, সেটা সিনিয়র নেতাদের বিবেচ্য বিষয়। যদিও ফিরহাদ হাকিমের দাবি, দলের অন্দরের বিষয় এইভাবে প্রকাশ্যে বলা উচিত নয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন