হাথরাস, উন্নাও, কাঠুয়াতে যাঁরা ধর্ষকদের মালা পরিয়েছেন, তাঁরা এই রাজ্যে ক্ষমতা দখলের জন্য আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করতে চাইছেন - সাংবাদিক বৈঠকে নাম না করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এবং বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ওই সম্মেলনে একাধিক বিষয় নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানান তাঁরা। মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে যে প্রতিশ্রুতিগুলি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি পালন করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ধনধান্য অডিটোরিয়ামে গণ কনভেশনের আয়োজন করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কিন্তু পরে অডিটোরিয়ামে অনুমতি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসকরা জানান, "আমাদের অনুমতি দিয়েছিলেন খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু কোনও অজানা কারণে এই অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। এই কনভেশন হবে এসএসকেএম হাসপাতাল অডিটোরিয়ামে। আমরা রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই সরকার যদি রোগী পরিষেবা এবং ডাক্তারদের সুরক্ষার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না করে তাহলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।''
পাশাপাশি আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে নিজেদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যাতে কোনও দল ব্যবহার না করতে পারে তা নিয়েও ফের সরব হলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা বলেন, “রাজ্যের ক্ষমতা দখলের ক্ষুদ্র স্বার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রথম থেকেই আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করতে চাইছে। আমরা বার বার স্পষ্ট করে জানিয়েছি, হাথরাস-কাঠুয়া-উন্নাওতে যাঁরা ধর্ষকদের মালা পরিয়েছেন, তাঁদের ক্ষমতা দখলের চক্করে আমাদের আন্দোলনকে ব্যবহার করতে দেব না। জনগণ দেবে না।’’
হাথরাস ধর্ষণকাণ্ড -
২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯-বছর-বয়সী এক দলিত তরুণীকে চার জন উচ্চবর্ণের ব্যক্তি গণধর্ষণ করে। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করে প্রথমে আলীগড়ের একটি হাসপাতালে এবং তারপর দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ১৫ দিন পরে, দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতদেহটি সন্ধ্যায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তরুণীর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নির্যাতিতার বাড়ির লোককে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রেখে, পুলিশ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জোর করে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় দেশজুড়ে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন সাধারণ মানুষ।
উন্নাও ধর্ষণকাণ্ড -
২০১৭ সালে ১৯ বছরের এক কিশোরীকে নিজের বাড়িতেই গণধর্ষণ করেন তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেনগার। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ধর্ষণ কান্ডে সেনগারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। এছাড়াও নির্যাতিতার বাবাকে হত্যার অভিযোগে ২০২০ সালের মার্চ মাসে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় সেনগারকে। এরপর বিজেপি দল থেকে বহিষ্কার করে তাকে।
কাঠুয়া ধর্ষণকাণ্ড -
জম্মু কাশ্মীরের এই এলাকায় আট বছরের এক শিশুকন্যাকে ২০১৮সালে জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখে অপহরণ করা হয়। ওই শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া যায় ১৭ জানুয়ারি। জানা যায়, শিশুটিকে অপহরণ করার পর আটকে রাখা হয়েছিল স্থানীয় এক মন্দিরে। সেই মন্দিরেই শিশুটিকে মাদক খাইয়ে বার বার ধর্ষণ করা হয়। তৎকালীন বিজেপি-পিডিপি সরকারে মন্ত্রী লাল সিং প্রকাশ্যেই অভিযুক্তদের সমর্থন জানান।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন