
আরজি কর মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে এবার হাইকোর্টে গেল রাজ্য। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাবাসের সাজা ঘোষণা করেছে। তখনই এই রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশনে বেঞ্চে সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)। রাজ্যকে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। বুধবার রাজ্যের আবেদন শুনবে হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চেই হবে শুনানি।
পাঁচ মাস পর সোমবার আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার রায় ঘোষণা করেছে শিয়ালদহ আদালত। এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা নয় হিসেবে বিবেচনা করে, মামলার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাস দিয়েছেন বিচারপতি অনির্বাণ দাস। আদালতের রায়ে খুশি নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমি সন্তুষ্ট নই। ফাঁসির সাজা হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’’
জয়নগর, ফরাক্কা এবং গুড়াপের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা টেনে মমতা বলেন, পুলিশের দেওয়া চার্জশিটের ভিত্তিতেই বিচার করে এগুলির ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা দিয়েছে নিম্ন আদালত। তিনি বলেন, ‘‘তিনটি কেসেই আমরা ফাঁসির সাজা করিয়ে দিয়েছি। এটা (আরজি কর মামলা) খুব গম্ভীর বিষয়।’’ আর এবার সাজা ঘোষণার একদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে হাইকোর্টে গেল রাজ্য।
যদিও কেন সঞ্জয় রায়কে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে আমৃত্যু কারাবাস দেওয়া হল? নির্দেশনামায় সেকথা ব্যাখ্যা করেছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারপতি অনির্বাণ দাস। তিনি নির্দেশিনামায় লিখেছেন, “যাবজ্জীবন হল নিয়ম। আর মৃত্যুদণ্ড হল ব্যতিক্রম”। বিচারক দাসের মতে, ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে ‘চোখের বদলে চোখ’ বা ‘দাঁতের বদলে দাঁত’ বা ‘নখের বদলের নখ’ বা ‘প্রাণের বদলে প্রাণ’-এর মতো প্রতিশোধমূলক প্রবৃত্তিগুলি থেকে সরে আসা উচিত। নির্দেশনামায় তিনি লিখেছেন, বর্বরতাকে বর্বরতা দিয়ে বিচার করা উচিত নয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন