R G Kar Case: আরজি কর কাণ্ডে আমৃত্যু কারাদণ্ড সঞ্জয় রায়ের

People's Reporter: এছাড়া নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অনির্বাণ দাস। রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।
R G Kar Case: আরজি কর কাণ্ডে আমৃত্যু কারাদণ্ড সঞ্জয় রায়ের
গ্রাফিক্স - আকাশ নেয়ে
Published on

আরজি কর কাণ্ডে সাজা ঘোষণা করল শিয়ালদহ আদালত। মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাস অর্থাৎ যাবজ্জীবন সাজা দিলেন বিচারপতি অনির্বাণ দাস। সব পক্ষের বক্তব্য শুনেই রায় ঘোষণা করলেন বিচারপতি। শনিবার অনির্বাণ দাসের এজলাস সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।

এছাড়া নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অনির্বাণ দাসের। রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়।

সোমবার দুপুর ১২ টা ৩৬ মিনিট নাগাদ শুরু হয় সাজা ঘোষণার প্রক্রিয়া। এদিনও সিবিআই সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ এটি। চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন। শুধু একটি পরিবার তাদের একজন সদস্যকে নয়, এক চিকিৎসককে হারিয়েছে সমাজ। এদিনও আদালতে কঠিন শাস্তির পক্ষে সওয়াল করে সিবিআই। অন্যদিকে, পরিবারের তরফ থেকেও সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করা হয়।

তবে এদিন আদালতে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করেন সঞ্জয় রায়ের আইনজীবী। তিনি আদালতে সওয়াল করেন, এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা নয়। মৃত্যুদণ্ড ছাড়া বিকল্প কোনও শাস্তির আবেদন জানান সঞ্জয় রায়ের আইনজীবী।

অন্যদিকে, এদিনও সঞ্জয় রায় নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করেন। এদিনও তার দাবি, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি নির্দোষ, তাকে জোর করে সই করানো হয়েছে, তাকে কিছু বলতে দেওয়া হয়নি। বিচারপতি অনির্বাণ দাস বলেন, ‘যা হয়েছে তা আপনার থেকে ভালো কেউ জানেন না’। বিচারক বলেন, ‘ধর্ষণকালীন আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার’।

এদিন সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ছিল শিয়ালদহ আদালত। উপস্থিত ছিলেন পাঁচজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, এসআই পদমর্যাদার ৩১ জন আধিকারিক। ছিলেন এএসআই পদমর্যাদার ৩৯ জন আধিকারিকও। এছাড়াও আদালত চত্বরে ও শিয়ালদহ এলাকায় ২৯৯ জন কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়েছিল। ছিলেন ৮০ জন মহিলা পুলিশ।

আরজি কর কাণ্ডে শনিবার শিয়ালদহ আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছিল মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ ধারা এবং ১০৩(১) ধারা (খুন) অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হয় সঞ্জয় রায়।

শনিবার আদালতে সঞ্জয় রায় বলেন, 'আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি কিছু করিনি। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা রয়েছে। দোষ করলে এই মালা ছিঁড়ে যেত। আমাকে যা যা বলা হয়েছিল আমি সেটাই করেছি।' বিচারক বলেন, 'সিবিআই-র দেওয়া তথ্য প্রমাণ দেখে আমি সন্তুষ্ট। তার ভিত্তিতেই দোষ প্রমাণিত। আপনাকে শাস্তি পেতেই হবে। যা বলার আগামী সোমবার বলবেন।'

গত বছর ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া। মোট ৫২ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। দু’মাস ধরে চলেছে বিচারপ্রক্রিয়া। তদন্তকারী সংস্থা দুটি চার্জশিট জমা দিয়েছে এই মামলায়। সেখানে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করেছে সিবিআই। আদালতে তার সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট আরজির করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরেও তীব্র প্রতিবাদ হয়। ১০ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয় রায়কে।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in