
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ২৫,৭৫২ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে গত সপ্তাহের ৩ এপ্রিল। সেই ধাক্কা কাটতে না কাটতেই ৮ এপ্রিল ফের সুপ্রিম শুনানি হতে চলেছে সুপার নিউমেরিক পদের বৈধতার বিষয়ে সিবিআই তদন্তের আদেশ নিয়ে। কলকাতা হাইকোর্টের যে রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার।
গত বছর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রাশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই সুপার নিউমেরিক পদ তৈরিতে রাজ্য মন্ত্রীসভার ভূমিকা খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে গেছে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় এবং মন্ত্রীসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে। আগামী ৮ এপ্রিল, মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।
স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে এই সুপার নিউমেরিক পদ তৈরি নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্ক হয়। কোন প্রয়োজনে অতিরিক্ত এই শূন্যপদ তৈরি করতে হল তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আদালতে। পাশাপাশি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে যায় রাজ্য মন্ত্রীসভার যুক্ত থাকার কথাও। কারণ রাজ্য মন্ত্রীসভার সুপারিশেই প্রায় ৭ হাজার (৬,৮৬১) অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছিল।
এই ক্ষেত্রে আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুসারে, বেআইনি চাকরি প্রাপকদের সুযোগ দিতে অতিরিক্ত এই শূন্যপদ তৈরিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল রাজ্য মন্ত্রীসভা। এক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রীসভার কোন কোন সদস্য এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে তাদের জেরা করার কথাও জানিয়েছিল আদালত।
এর আগে ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর আদালতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন জানিয়েছিলেন, এই বিষয়ে উপযুক্ত স্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য মন্ত্রীসভার অনুমোদনে এই পদ তৈরি হয়েছে এবং এই পদে বৈধ শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে। এছাড়াও যে সব শিক্ষকরা ওয়েটিং লিস্টে যারা আছেন তাদেরও নিয়োগ করা হবে।
শিক্ষাসচিবের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, অবৈধ বেআইনি নিয়োগের জন্য রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে এই সুপার নিউমেরিক পোষ্ট তৈরি করা হয়েছে। রাজ্য মন্ত্রীসভার অনুমোদনে যে পদ সৃষ্টি করা হয়েছে তা অসাংবিধানিক। এই পদ সৃষ্টি করে অবৈধ চাকরির বৈধতা দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এসএসসি-র বিধিতে এই ধরণের নতুন পদ সৃষ্টির কথা নেই। যদিও ২০১৬ সালের ঘটনার ৬ বছর পর ২০২২-এ এই সুপার নিউমেরিক পদ তৈরি করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন