
• হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে নয়া সংরক্ষণ বিধি আনছে রাজ্য সরকার।
• হাইকোর্টের দেওয়া এক রায়ের প্রেক্ষিতে বাতিল হয়ে যায় ২০১০ সালের পর রাজ্যের দেওয়া সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র।
• এখন তালিকায় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংখ্যা বেড়ে হল ১৪০।
হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে ওবিসি বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণে নয়া বিধি আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। এমনকি নতুন করে বেড়ে যাচ্ছে অনগ্রসর শ্রেণির সংখ্যা। সোমবার মন্ত্রিসভায় সেই সংক্রান্ত সংশোধিত তালিকার খসড়া পেশ করে অনগ্রসর কল্যাণ দফতর। যে খসড়া তালিকায় সিলমোহর দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা যাচ্ছে, আসন্ন বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট সংশোধনী পেশ করা হবে। যা বিধানসভায় পাশ হলেই পরিণত হবে আইনে।
গত বছর মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া এক রায়ের প্রেক্ষিতে বাতিল হয়ে যায় ২০১০ সালের পর রাজ্যের দেওয়া সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাজ্য সরকার ৭৭টি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার মধ্যে ৭৫টিই মুসলিম ধর্মাবলম্বী। যা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলে, ২০১০ সালের পরে সমস্ত শংসাপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই অন্তর্ভুক্তির প্রধান ভিত্তি ছিল ধর্মীয় মানদণ্ড, যা সংবিধানসম্মত নয়। এর জেরে ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। কিন্তু শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের এই রায়ের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করে নি।
এরপর নতুন করে ওবিসি চিহ্নিত করতে সমীক্ষা শুরু করে রাজ্য সরকার। সেই সমীক্ষার ফলের উপর ভিত্তি করে এই নয়া সংশোধীত বিধি আনতে চলেছে সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, আগের তলিকায় ৬৬টি জাতির নাম ছিল। সেই সংখ্যা কমিয়ে ৬৪ করা হয়েছে। সঙ্গে নতুন করে আরও ৭৬ টি জাতি যুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে এখন তালিকায় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংখ্যা বেড়ে হল ১৪০।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম সোমবার বলেন, “১৪০টি জাতিকে ওবিসি সংরক্ষণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার রাজ্য মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওবিসি তালিকাভুক্ত সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এই পদক্ষেপ আগামী প্রজন্মের জন্য এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে"।
আগামী ৯ জুন বিধানসভায় শুরু হতে চলেছে বিশেষ অধিবেশন। সেই অধিবেশনে এই সংশোধীত তালিকা পেশ করা হবে। বিধানসভায় পাশ হলেই তা আইনে পরিণত হবে বলে জানা গেছে। এর ফলে একাধিক ক্ষেত্রে শূন্য পদের দীর্ঘ অচলাবস্থা দূর হয় কিনা, তা দেখার এখন।
অন্যদিকে, আগামী ১৯ জুন কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। কী পদ্ধতিতে সমীক্ষা করে নতুন তালিকা তৈরি করা হবে, হলফনামা দিয়ে রাজ্য সরকারকে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সূত্রের দবি, এর ফলে সরকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়গুলিকে সংরক্ষণের সুবিধা দিতে চায়। হাইকোর্টের পাশাপাশি, শীর্ষ আদালতেও এই মামলার শুনানি রয়েছে আগামী জুলাইতে। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, নতুন সার্ভে শেষ করতে তিন মাস সময় লাগবে।
Keywords: OBC certificate, West Bengal, 140 communities, Govt of West Bengal, Mamata Banerjee
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন