
ন'বছরের দলিত শিশুকন্যাকে ধর্ষণের পর ছুরি দিয়ে গলা কেটে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল এক মাছ বিক্রতার বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই বালিকাকে উদ্ধার করে পাটনা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কেবল বেড পেতেই ছ'ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনার পরের দিনই মৃত্যু হয় মেয়েটির। সম্প্রতি বিহারের মুজাফফরপুরে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভোটমুখী বিহারের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী আরজেডি। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর দাবি, সময়মতো চিকিৎসা পেলে প্রাণে বেঁচে যেত কন্যাটি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ন'বছরের বালিকাকে খাবারের লোভ দেখিয়ে নির্জন জায়গায় নিয়ে যান অভিযুক্ত রোহিত সাহানি। এরপর তাকে ধর্ষণ করে। তারপর ছুরি দিয়ে মেয়েটির গলা কেটে পালিয়ে যান রোহিত। সেই সময় ঘুমাচ্ছিলেন মেয়েটির মা। ঘুম থেকে উঠে মেয়েটির খোঁজ করলে স্থানীয়রা জানান, রোহিতের সঙ্গে বাইকে গেছেন। এরপর রোহিতকে জিজ্ঞাসা করলে, প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে সব কথা স্বীকার করে সে।
ঘটনাস্থল থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রথমে মুজাফফরপুরের শ্রীকৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সেই হাসপাতাল থেকে মেয়েটিকে পাটনা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, টানা ছ'ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে চিকিৎসার জন্য। এর পরের দিনই মৃত্যু হয় মেয়েটির।
যদিও পরিবারের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে পাটনা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। পটনা মেডিক্যাল কলেজের ইনচার্জ সুপার অভিজিৎ সিংহ জানিয়েছেন, "ভর্তি করার পর থেকে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছি। চিকিৎসায় বিলম্ব হয়েছে বলে পরিবার যে দাবি করছে তা ভিত্তিহীন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আমরা প্রয়োজনীয় সমস্ত বিভাগের সাথে পরামর্শ করেছি এবং নিশ্চিত করেছি যে তাকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে"।
এই ঘটনার পরেই বিহারের নীতিশ কুমারের সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল আরজেডি। এক্স হ্যান্ডেলে আরজেডি পোস্ট করে লিখেছে, "ধনী ও গরীবের বিরোধ করে যে সরকার তারা জিতেছে, মানবতা হেরেছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের নিষ্ঠুর ও উদাসীন ব্যবস্থা জিতেছে"।
অন্যদিকে, এই ঘটনাকে 'অত্যন্ত লজ্জাজনক' বলে জানিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি জানিয়েছেন, "সময়মতো চিকিৎসা হলে, মেয়েটিকে বাঁচানো যেত। কিন্তু ডবল ইঞ্জিন সরকার বালিকাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার একটা জীবন বাঁচানোতেও গাফিলতি করেছে"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন