কলকাতা বইমেলা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের স্টলে একই সঙ্গে গোলওয়ালকার, হেডগেওয়ার, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি রয়েছে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ছবিও। বইমেলা শুরু হতেই এই ছবি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ইতিহাস সচেতন পাঠক থেকে শুরু করে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদরা। এভাবে তাঁকে দেখা যাবে, তা সম্ভবত কেউই কল্পনা করেননি।
ভীষণভাবে 'ধর্মনিরপেক্ষ' সুভাষচন্দ্রের কোন কাজেই সাম্প্রদায়িকতার লেশমাত্র পাওয়া যায়নি। যারা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতাদর্শ ধারক তাদের সঙ্গে একই সারিতে সুভাষচন্দ্র ছবি রাখাটা অপমানজনক বলে মনে করছেন ইতিহাসবিদদের একাংশ।
সুভাষ ও ভিএইচপি, আরএসএসের আদর্শের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। তখনকার হিন্দু মহাসভার সঙ্গে তাঁর আদর্শগত বিরোধও সবাই জানতেন। সুভাষচন্দ্র সর্বধর্ম সমন্বয়, সম্প্রীতি ও সমাজতন্ত্রের প্রতি একনিষ্ঠ ছিলেন। সুভাষের ঝাঁসি রানি বাহিনীকে নারী স্বাধীনতার প্রতীক ধরা হয়। মেয়েদের এই মর্যাদা সঙ্ঘের আদর্শে দেখা পাওয়া যায় কোথায়? প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের।
অনেকে মনে করছেন, আধুনিক ভারত গঠন বা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়কদের মধ্যে সঙ্ঘঘনিষ্ঠ বা হিন্দুত্ববাদী কেউ ছিলেন না। তাই কখনও গান্ধী, কখনও অম্বেডকর বা সুভাষকে ‘আত্মসাৎ’ করতে চাইছে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্বাঞ্চলীয় সম্পাদক অমিয় সরকার বলছেন, ‘সুভাষ কি ভারতের বাইরে? তিনি আমাদের রাষ্ট্রনেতা।’ বইমেলার স্টলে স্বামী বিবেকানন্দের ছবিও রয়েছে। বিবেকানন্দও তাঁদের রাষ্ট্রঋষি বলে দাবি ভিএইচপি নেতার।
কিন্তু ইতিহাসবিদের মতে, ভিএইচপি, সঙ্ঘের হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের সঙ্গে বিবেকানন্দের আদর্শও মেলে না। আজ়াদ হিন্দ ফৌজের সেনানায়কের জীবনে কোথাওই হিন্দু-মুসলিমে ভেদাভেদ ছিল না। তাঁর অনেক মুসলিম ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।