
নতুন করে বাজার থেকে ৮১ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা ঋণ নেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বুধবার বাজেট অধিবেশনের শেষে বিকেলে সাংবাদিক সম্মলন করে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, তৃণমূলের সময় রাজ্যের ঋণ বেড়েছে চারগুন। শখ আহ্লাদ মেটানোর জন্য বাজার থেকে বেশি সুদে ঋণ নেওয়া হচ্ছে।
বুধবার বিধানসভায় পেশ হয়েছে রাজ্যের পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই মমতা সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। এদিন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিধানসভায় বাজেট পেশ করেন। অধিবেশন শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা অর্থ উপদেষ্টা অমিত মিত্র। সেখানেই রাজ্যের নতুন করে ঋণ নেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
যার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সেলিম বলেন, “এত ঋণ করে কী হচ্ছে? এই ঋণের অর্থ কোথায় যাচ্ছে? বাধ্যবাধকতা কী? বাজার থেকে বেশি সুদে ঋণ নেওয়া হচ্ছে শখ আহ্লাদ মেটানোর জন্য। বেকারদের কাজ দেওয়ার ব্যাপারে কোনও ভাবনাচিন্তাই নেই। কত কর্মসংস্থান হলো, কতো কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা আছে, তার বিন্দু বিসর্গ জানা নেই”।
রাজ্যের আবাস যোজনা প্রকল্প নিয়ে সেলিমের কটাক্ষ, “আবাস যোজনা নিয়ে এত হইচই হচ্ছে। ওরা বলল কেন্দ্র টাকা দেবে না, রাজ্য বাজেট থেকে হবে। এখন বলছে অর্ধেক টাকা বাজারে ছেড়ে দিয়েছি। তাতে দুর্নীতি বেড়েছে। মানুষের ঘর তো শেষ হচ্ছে না। অসম্পূর্ণ ঘর পড়ে আছে। কিস্তি অসম্পূর্ণ। যাদের ঘর পাওয়ার কথা, সেই গৃহহীন মানুষরা ঝুপড়ি করে আছেন, ত্রিপল-চট লাগিয়ে আছেন। এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। রাজ্যের আবাস যোজনা কেন ব্যর্থ হলো তা নিয়ে কোনও কথা মুখ্যমন্ত্রীর নেই। কেবল টাকার অঙ্ক দিয়ে বোঝাবেন?”
রাজ্যের গত বাজেট অনুযায়ী পুঞ্জীভূত ঋণের অঙ্ক ৬ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এদিকে বিগত বামফ্রন্ট সরকারের সময় পর্যন্ত মোট ঋণের অঙ্ক ছিল ১ লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, ১৯৪৭ সালের পর থেকে ২০১১ পর্যন্ত রাজ্যের মোট ঋণ ছিল ২ লক্ষ কোটি টাকার কম। আর বর্তমান তৃণমূল সরকারের ১৫ বছরেরও কম সময়ে প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছাবে এই পুঞ্জীভূত ঋণ।
সেলিমের কটাক্ষ, “রাজ্যের ঋণ চারগুণ হলো তৃণমূলের সময়ে। অথচ বামফ্রন্ট সরকারকে দোষ দিচ্ছে!”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন