'আমি তো একটাও CPIM ক্যাডারের চাকরি খাইনি, তোমরা কেন খাচ্ছ?': মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "গতকালও দুজন আত্মহত্যা করেছে। আমি হাইকোর্টকে বলবো এটা ভেবে দেখতে। তাঁদের চাকরিটা ফিরিয়ে দিন।" প্রয়োজন হলে নিজে আদালতে দাঁড়িয়ে চাকরিহারাদের হয়ে সওয়াল করবেন বলেও জানয়েছেন তিনি।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ফাইল ছবি সংগৃহীত

"আমি ক্ষমতায় আসার পর একটাও সিপিআইএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই, শুধু কাড়বার ক্ষমতা আছে!" কার্যত নিয়োগ দুর্নীতির পক্ষে সওয়াল করে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে স্বাধীনতা সংগ্রামী অরবিন্দ ঘোষের ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি চলে যাওয়াদের হয়ে সওয়াল করেছেন তিনি। বিচারপতিদের কটাক্ষ করে বলেন, কথায় কথায় চাকরি খাবেন না। চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এখন রোজ কথায় কথায় ৩ হাজার চাকরি বাদ। ৪ হাজার চাকরি বাদ। এটা কি রাজনীতি নয়? আমি ক্ষমতায় আসার পর একটাও সিপিআইএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কিল মারার গোঁসাই হয়েছে কিছু লোক!" প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইঝিরও।

তিনি বলেন, "আমরা তো আইনজীবীদের উপর নির্ভর করি। বিচারপতিদের রায়কে সম্মান জানাই। আমি অধিকার কাড়ার পক্ষে নয়, অধিকার দেওয়ার পক্ষে। যেটা আইনত স্বীকৃত সেই অধিকারের কথা বলছি আমি। আমি যদি অন্যায় করি, আপনারা আমার গালে দুটো চড় মারুন, যা ইচ্ছা আমাকে দু-বেলা গালাগালি দিন। কিন্তু ছাত্র যৌবনের খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেবেন না।"

এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পূর্বতন বামফ্রন্ট আমলের একটি রায়ের কথাও টেনে আনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি রায় শুনেছিলাম। চাকরি নিয়ে মামলার রায়ে তিনি বলেছিলেন, ‘যদি ভুল থাকে সংশোধন করে নাও।’ উনি চাকরি খাওয়ার কথা বলেননি।’’

চাকরি হারাদের পক্ষ নিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "গতকালও (সোমবার) দুজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। যদি কেউ ভুল করে থাকে তার দায় ওঁরা (চাকরি হারা) কেন নেবেন? আজ চাকরি করে বলে দুজন ছেলেমেয়ে বিয়ে করেছেন। বাবা মায়ের দেখাশোনা করছেন। হঠাৎ করে চাকরি চলে গেলে খাবেন কি তাঁরা! আমি হাইকোর্টকে বলবো এটা ভেবে দেখতে। তাঁদের চাকরিটা ফিরিয়ে দিন। ওঁদের একটা সুযোগ দেওয়া হোক। দরকার হলে আবার পরীক্ষা নেওয়া হোক। আলাদা কোনও বন্দোবস্ত করতে বললে সেটাও করে দেব। যেটা বলবেন, সেটাই মেনে নেব। সিদ্ধান্তটা আপনারা (বিচারপতি) নিন।" প্রয়োজন হলে নিজে আদালতে দাঁড়িয়ে চাকরিহারাদের হয়ে সওয়াল করবেন বলেও জানয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে প্রায় ৭৩০ দিন ধরে গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্না দিচ্ছেন মেধা তালিকায় নাম থাকা চাকরিপ্রার্থীরা। মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের ভাষণে তাঁদের কথা একবারও উঠে আসেনি।

এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। ঘটনাচক্রে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি বাতিলের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বহাল রেখেছে। এদিন বিচারপতি সুব্রত তালুকদারকে 'সুব্রত দা' বলে সম্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'চিফ জাস্টিসকে পেলাম না। সুব্রত দাকে পেলাম। আমার মনের ভাবনা সুব্রতদাকে জানিয়ে দিলাম। কথায় কথায় লোকের চাকরি খাবেন না।'

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমবায় সমিতির নির্বাচনে TMC-BJPকে হারিয়ে বিপুল জয় সিটুর

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in