নেতা-মন্ত্রীরা ড্রাইভার মারফত লিস্ট পাঠাতেন, বিষ্ফোরক অভিযোগ প্রাক্তন SSC চেয়ারম্যানের
চাকরি করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করলেন SSC-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল।
স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে টালমাটাল রাজ্য। তারই মধ্যে উঠে এলো প্রাক্তন SSC চেয়ারম্যান মারফত বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১১-র জুন মাস থেকে ২০১৩-র অক্টোবর মাস পর্যন্ত SSC-র চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ করলেও মন্ত্রীর তরফে কোনোরকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি। প্রসঙ্গত, তখন তৃণমূলের মহাসচিব ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
প্রাক্তন চেয়ারম্যানের কথায়, "প্যাডের পর প্যাড কাগজ, নাম, সই আসত। বড় বড় নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ আবার গাড়ির ড্রাইভার মারফত সেগুলি পাঠাতেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ ছিল বিভিন্ন ধরনের লিস্ট দিয়ে চাকরি করে দেওয়ার জন্য। যাঁরা চাপ দিতেন বা চিঠি পাঠাতেন তাঁরা অবশ্যই নেতা-মন্ত্রী। ক্রমে ক্রমে চাপ বাড়তে লাগলেও আমরা সেই চাপের মুখে নতিস্বীকার করিনি।"
তিনি আরও জানিয়েছেন, "তৃণমূলের মহাসচিব থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমাকে পদত্যাগ করতে বলেন। আমার সাথে যথেষ্ট দুর্ব্যবহার করা হয়। দুঃখে আমি পদত্যাগ করেছিলাম। যে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছিলাম তাতে কোনোরকম cause of action ছিল না। এরপরেও আমাকে পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নিতে বলা হয়নি। হয়তো তাড়া ছিল খুব। যত তাড়াতাড়ি আপদ বিদেয় হয়, ততোই ভালো হয়। ব্রাত্য বসু কোনোদিন এভাবে চাপ দেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী আমাকে নিজের দপ্তরে ডেকে বলেছিলেন কোনধরনের কম্প্রোমাইজ করতে না।"
চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের বক্তব্য, স্বচ্ছতা আনার জন্য টেট পরীক্ষাতে কার্বনলেস ডুপ্লিকেট ব্যবহার করা হয়েছিল। যাতে পরীক্ষার্থীরা বুঝতে পারে যে তাঁরা যা লিখেছে সেই অনুযায়ী নম্বর পাবেন। ২০১১ সালের পুজোর আগে এই প্রক্রিয়া আরোপ করা হয়েছিল।
এক সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন করা হয় "এই সংকটের কারণ কী?" প্রত্যুত্তরে চিত্তরঞ্জন বলেন, "কারণ মেধাভিত্তিক নিয়োগ না করার প্রচেষ্টা। ওনারা নিশ্চয়ই স্বচ্ছ নিয়োগের পথ অবলম্বন করেননি। যার প্রথম সিগনেচার হিসেবেই রয়েছে কার্বনলেস ডুপ্লিকেট তুলে দেওয়া। এখান থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায় উদ্দেশ্যটাই সঠিক ছিল না।"
এইসব মিলিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগের দুর্নীতির বিষয়টি ক্রমশ আরও জটিল হয়ে উঠছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন