
‘পুলিশ কারও বিরুদ্ধে না। পরিস্থিতি বাধ্য না করলে পুলিশ বলপ্রয়োগ করত না’। কসবায় চাকরিহারাদের উপর পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের ঘটনায় এমনই দাবি কলকাতা পুলিশ কমিশনার (সিপি) মনোজ বর্মার। এই ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে পদক্ষেপ নিতেই হবে।
এদিন বিকালে নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং পুলিশ কমিশনার (সিপি) মনোজ বর্মা সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে চাকরিহারাদের উপর লাঠিচার্জের ঘটনা নিয়ে সিপির বক্তব্য, “এটা কাম্য নয়। তবে পুলিশেরও অনেকে আহত হয়েছেন”।
সিপিকে পাশে বসিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবও বলেন, “সরকারি সম্পত্তি যদি ভাঙচুর হয়, পুলিশকে মারধর করা হয়, তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় পুলিশকে তো পদক্ষেপ করতেই হবে”।
এদিন সিপি আরও বলেন, “পুলিশের কাছে আগে থেকে খবর ছিল না। বিনা উস্কানিতেই পুলিশের উপর হামলা হয়েছে। আমাদের ছ’জন আহত। এক জন গুরুতর আহত। পুলিশের লাথি মারার যে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে ভিডিয়োটা দেখানো হচ্ছে, তার আগেও কিছু রয়েছে। সেটাও দেখা উচিত। আমরা দেখছি”।
অন্যদিকে, এদিন সাংবাদিক বৈঠকের আগে লালবাজারের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, “আজ কসবা ডিআই অফিসের বাইরে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে স্পষ্ট ভাবে জানানো হচ্ছে যে, প্রথমে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা বিনা উস্কানিতে পুলিশকর্মীদের উপর হামলা চালায় এবং হিংসাত্মক আচরণ করে, যার মধ্যে মহিলা পুলিশকর্মীরাও ছিলেন। চার জন পুরুষ পুলিশকর্মী এবং দু’জন মহিলা পুলিশকর্মী আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন”।
বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আরও ক্ষয়ক্ষতি ও আহতের ঘটনা রোধ করতে পুলিশ বাধ্য হয়ে হালকা বলপ্রয়োগ করে। এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে”।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে চাকরিহারাদের একাংশ জড়ো হন কসবায় স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) অফিসের সামনে। তবে পুলিশ আগে থেকেই ডিআই অফিসের গেটে তালা লাগিয়ে রাখে। কিন্তু বেলা গড়াতেই গেটের তালা ভেঙ্গে অফিসের ভিতরে প্রবেশ করেন চাকরিহারারা। তাঁদের দাবি, স্কুল পরিদর্শককে (ডিআই) দেখা করতে হবে তাঁদের সাথে। তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেবেন তাঁরা। কিন্তু অফিসে ছিলেন না ডিআই। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যাপক লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এক শিক্ষকের পেটে লাথি মারতেও দেখা যায় পুলিশকে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। লাঠিচার্জের জেরে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে দু'জন শিক্ষিকা আছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন