
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় আগামীকাল সোমবার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিল এসএফআই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট। একই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। এসএফআই জানিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের ওপর তৃণমূলের শিক্ষামন্ত্রীর জঘন্য আক্রমণ, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানানো ছাত্রছাত্রীদের ওপর বিজেপির কায়দায় গাড়ি চালিয়ে খুনের চেষ্টা, ক্যাম্পাসে ভয়ভীতির পরিবেশ কায়েম করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তাদের এই বিক্ষোভ।
এদিনই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এক এক্স বার্তায় (পূর্বতন ট্যুইটার) তিনি বলেন, “কৃষক বিক্ষোভে বিজেপি নেতার গাড়ি চাপা দিয়ে কৃষক হত্যার ঘটনা মনে করিয়ে দিল আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত ছাত্রদের ওপর টিএমসি মন্ত্রীর গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য ঘটনা।”
এদিন যাদবপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মহম্মদ সেলিম জানান, তৃণমূল কংগ্রেস জন্মলগ্ন থেকে সবই এসএফআই করেছে, সিপিআইএম করেছে। ওনাকে জিজ্ঞেস করো জ্ঞানেশ্বরী কান্ডে কারা আগুন লাগিয়েছিল? এত লোকের প্রাণ কারা নিয়েছিল। ব্রাত্য বসু তথাকথিত ভাড়াটেদের নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করেছিল। ওরা আগে বলুক, জ্ঞানেশ্বরী কান্ড কারা ঘটিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, যেখানে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান হয়, সেখানেই তারা মনে করে বিশ্ববিদ্যালগুলো যেহেতু প্রশ্ন করতে শেখায়, যুক্তিবাদী মন তৈরি করে তাই মোদিরাও বলেন, মমতাও বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শয়তান তৈরির কারখানা। শয়তান দূর করতে গেলে আরও বেশি পঠনপাঠনের দরকার হয়।
শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে ছিল ওয়েবকুপার বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দেন ব্রাত্য বসু। এদিকে এদিন বৈঠক শুরুর আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছিল উত্তেজনাময় পরিস্থিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ ভোটের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন এসএফআই, আইসা, ডিএসএফ (ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস ফ্রন্ট) –এর সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা।
যার ফলে বৈঠকে যোগ দিতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েন ব্রাত্য বসু। তাঁকে কোনওরকমে ৩ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করিয়ে ওপেন এয়ার থিয়েটারের পিছন দিয়ে মঞ্চে তোলা হয়। কিন্তু বৈঠক শেষে বেরিয়ে ফের আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। অভিযোগ, তাঁর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, গাড়ির ওপরে লিখে দেওয়া হয়েছে ‘চোর ব্রাত্য’। এছাড়া গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে ‘চোর-চোর’, ‘গো-ব্যাক' স্লোগান ওঠে। এমনকি গাড়ির উপর জুতো ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ।
যাদবপুরের ঘটনায় সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, '"সংস্কৃতিবান" শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে বিক্ষোভরত ছাত্রদের শরীরের ওপর দিয়ে গাড়ি চালানোয় চারজন ছাত্র গুরুতরভাবে আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাংলার একটি প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ক্যাম্পাস গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দায়হীন শিক্ষামন্ত্রীর এই কদর্য নির্মমতায় আমরা স্তম্ভিত!"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন