
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলার অভিযোগে ধৃত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিন্দোল মজুমদারকে জামিন দিল আলিপুর আদালত। সোমবার পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষের পর আদালতে তোলা হয় তাঁকে। এদিন তাঁর আইনজীবী গোপাল হালদার জানান, মামলায় নতুন কোনও অগ্রগতি নেই। তাঁর মক্কেল স্পেনে থাকেন। কলকাতাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও জামিনের বিরোধিতা করেছেন সরকারি আইনজীবী।
সোমবার হেফাজতের মেয়াদ শেষ হলে ফের আদালতে পেশ করা হয় হিন্দোলকে। এদিন আদালতে পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়, হোয়াটসঅ্যাপ মারফত যাদবপুরের প্রাক্তন পড়ুয়াদের মেসেজ করে শিক্ষামন্ত্রীর উপর 'হামলার' উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন হিন্দোল। কেস ডাইরিতে সবিস্তারে উল্লেখ আছে বলে জানান সরকারি আইনজীবী। যদিও এর পাল্টা হিন্দোলের আইনজীবী জানান, "ছেলেটার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখুন, ভদ্রলোকের ছেলে। ঘটনার সময় সশরীরে উপস্থিতও ছিল না।"
দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর ১০০০ টাকার বন্ডে হিন্দোলকে জামিন দেন বিচারক। হিন্দোলের আইনজীবীর তরফে আর্জি জানানো হয়, এমন কোনও কঠিন শর্ত যেন আরোপ না-করা হয়, যাতে ওই গবেষকের পড়াশোনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন বিচারক।
অন্যদিকে, হিন্দোলকে গ্রেফতার করার প্রতিবাদে এবং তাঁর মুক্তির দাবিতে সোমবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষক, ছাত্র ও প্রাক্তনীরা মিছিল করেন। তারই মাঝে হিন্দোলের জামিনের খবর আসে।
উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ভাঙচুর এবং তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। তাতে নাম জড়ায় যাদবপুরের প্রাক্তনী হিন্দোল মজুমদারের। গবেষণার জন্য বর্তমানে স্পেনে থাকেন ওই যুবক। গত বৃহস্পতিবার দিল্লি বিমানবন্দরে নামতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার তাঁকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে সরকারি সোমবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।
পুলিশের অভিযোগ ছিল, কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কিলোমিটার দূরে স্পেনে বসেই ব্রাত্য বসুর উপর হামলার পরিকল্পনা করেছেন হিন্দোল। পুলিশের আরও দাবি, যাদবপুরের পড়ুয়াদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত হামলার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে দেন তিনি।
হিন্দোল প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল শুক্রবার আদালতে দাবি করেছিলেন, ‘‘কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে হামলায় আফতাব আনসারিও সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। দুবাইয়ে বসে ষড়যন্ত্র করেন। তাঁর নির্দেশেই পুরো ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল। পুলিশ ওই ঘটনায় কয়েক জন অভিযুক্তকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করেছিল। তার পরেই বিদেশে বসবাসকারী ওই ঘটনার মূল চক্রী আফতাব আনসারির নাম জানা গিয়েছিল। পরে দুবাই থেকে আফতাব আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন