
এর আগেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এবার হাওড়ার তৃণমূল শিক্ষক নেতা সিরাজুল ইসলামকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। শুক্রবার সিআইডিকে এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চ।
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বসু বলেন, "শুক্রবারই ওই শিক্ষক নেতাকে গ্রেফতার করুন। হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করুন। ওই শিক্ষক নেতাকে আবার স্কুলে দেখতে পাওয়া গেলে আদালত কড়া পদক্ষেপ করবে"। আগামী ৯ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন সিআইডিকে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০০১ সালে বাম আমলে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে সিরাজুলের বিরুদ্ধে। এরপর শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকারের কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিভাগে নিয়োগ দুর্নীতিতেও তাঁর নাম জড়ায়। সোমা রায় নামক এক চাকরিপ্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর বিচারপতি বসুর নির্দেশে তিন সদস্যের এক কমিটি গঠন হয়, যা সারা রাজ্যে বেআইনি শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত তদন্ত করে। সেই তদন্তে প্রকাশ্যে আসে সিরাজুলের নাম। কিন্তু তারপরেও সিরাজুলের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কারণ সম্প্রতি হাওড়া জেলায় তৃণমূলের শিক্ষা সেলের সাধারণ সম্পাদক করা হয় তাঁকে।
গত জানুয়ারিতে বিচারপতি বসুর নির্দেশে পাঁচ মিনিটের মধ্যে সিরাজুলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে হাওড়া সদর থানা। এরপর বিচারপতি বসুর নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন সিরাজুল।
বিচারপতি মান্থা এবং বিচারপতি গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানিতে জানান, 'ওই শিক্ষক চুরি করে চাকরি পেয়েছেন। কোনও ভাবেই তাঁর চাকরি থাকতে পারে না। তাঁর নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি।' এরপরেই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন। যদিও শুক্রবার সেই বরখাস্তের নির্দেশ পরিবর্তন করে সিরাজুলকে সাসপেন্ড করা হয়। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যেহেতু মামলাটি সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারাধীন, তাই ওই বিষয়ে সেই বেঞ্চই সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে বিচারপতি বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চে শুক্রবারই ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানিতে হাই কোর্টের মন্তব্য, "ওই শিক্ষক নেতা মহান ব্যক্তি! দুর্নীতি করেও তিনি রেহাই পেতে চাইছেন"। আদালত জানায়, তাঁর বেতন আপাতত বন্ধ থাকবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন