
দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পরে ফের সক্রিয় রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করছেন সিপিআইএম থেকে বহিষ্কৃত নেতা তথা অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিৎ বসু। সোমবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগদান করবেন। তাঁর কথায়, বামপন্থীরা যে কাজ মুখে বলেন, রাহুল গান্ধী তা রাস্তায় নেমে করে দেখাচ্ছেন।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র থাকাকালীন এসএফআই-এর অন্যতম মুখ হিসেবে পরিচিত ছিলেন প্রসেনজিৎ বসু। তাঁকে সেই সময় অনেকেই ‘এসএফআই’-এর মুখ্য মস্তিষ্ক বলেই মনে করতেন। ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সিপিআইএম প্রণব মুখার্জিকে সমর্থন দেওয়ায়, প্রকাশ্যে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন প্রসেনজিৎ। যার কারণে তাঁকে বহিষ্কার করে সিপিআইএম পলিটব্যুরো। যদিও দলের একাংশের মতে প্রসেনজিৎ আগে ইস্তফা দিয়েছিলেন। পরের দিন বহিষ্কৃত হন।
এবার কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বসু বলেছেন, তিনি আসছেন সংবিধান রক্ষার ও ভোটাধিকার রক্ষার লড়াইয়ে অংশ নিতে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তিনি দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) ও বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতে কংগ্রেস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
প্রসেনজিৎ-র যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ সৈয়দ নাসির হুসেন, যিনি একসময় জেএনইউতে বসুর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ২০০০ সালে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে হুসেন ও বসুর মধ্যে দ্বন্দ্বই সুযোগ দিয়েছিল এবিভিপিকে, যারা সেই বছর প্রথমবারের মতো সভাপতি পদ জিতেছিল। এছাড়া থাকবেন কানহাইয়া কুমার, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গোলাম আহমেদ মীর সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
বাম ছাএনেতা থেকে থেকে কংগ্রেসে আসা নতুন নয়। এর আগে ডি পি ত্রিপাঠি, শাকিল আহমেদ খান, সৈয়দ নাসির হুসেন, কানহাইয়া কুমারের মতো ব্যক্তিরা কংগ্রেসে যোগ দেন। তবে বাম শিবির থেকে কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের অনেকেই ক্ষুব্ধ। একাংশের অভিযোগ, অন্য দল থেকে আসা নেতাদের বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে দল।
তবু বসুর বক্তব্য, তাঁর এই সিদ্ধান্ত কোনও ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয়, বরং বৃহত্তর রাজনৈতিক লড়াইয়ের অঙ্গ। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, “আমাদের তাৎক্ষণিক লক্ষ্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে শক্তিশালী করা এবং কেন্দ্র ও পশ্চিমবঙ্গে প্রগতিশীল বিকল্প শক্তি পুনর্গঠন করা।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন