

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবিতে সোচ্চার বামপন্থী যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ চেয়ে প্রথম দিন থেকেই ময়দানে দেখা গেছে বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠন এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই-কে।
আনিস খানের মৃত্যু মামলায় গতকালই কলকাতা হাইকোর্টে চার্জশিট পেশ করেছিল রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল সিট। আর সেখানেই বলা হয়েছে যে, খুন নয় বরং ছাদ থেকে পড়ে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে আমতার বাসিন্দা আনিস খানের।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারী রাতে আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনার পর উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। আনিসের বাবা, দাদা সহ পুরো পরিবার প্রথম থেকে পুলিশকেই আনিসের হত্যাকারী হিসেবে অভিযোগ করেছে। যেখানে মূল অভিযোগ পুলিশেরই বিরুদ্ধে সেখানে সিটের উপর কোনওভাবেই ভরসা রাখতে পারেননি আনিসের পরিবার। বারংবার সিবিআই তদন্তের দাবি চেয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে আনিসের পরিবার।
এরই পাশাপাশি, আনিসের মৃত্যুতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বামেরা। এর আগে আনিসের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে গ্রেপ্তার হতে হয়েছিল ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জী সহ ১৭ জন ছাত্র-যুবদের। কিন্তু তাতেই থেমে থাকেনি আন্দোলন।
সোমবার, আদালতে চার্জশিট পেশ করার পরই ফের পথে নামলেন বামেদের যুব সংগঠন। আনিসের পরিবার যাতে সুবিচার পায় সেই লক্ষ্য নিয়েই এবার সারা রাজ্য জুড়ে সই সংগ্রহে নামছেন মীনাক্ষী মুখার্জী সহ বামপন্থী যুবরা। তাঁদের অভিযোগ, আনিসের মৃত্যুর জন্য পুলিশই দায়ী। তাই দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে ডিওয়াইএফআই বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছে। সেগুলি হল,
১) কেন পুলিশ সেদিন অত রাতে কোনও অভিযোগ ছাড়াই আনিসের বাড়ি গিয়েছিল?
২) যে পুলিশ খুন করল, সেই পুলিশের নেতৃত্বেই শেষ পর্যন্ত সিট গঠন করে দোষীদের কেন আড়াল করা হচ্ছে?
৩) আনিস মারা যাওয়ার পর পুলিশ চলে গেল কেন?
৪) কেনই বা আনিসের ডেডবডির খবর আনিসের বাবার কাছ থেকে পাওয়ার পরও পুলিশের ১৯ ঘণ্টা লাগল দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে?
এই সকল প্রশ্নকে সামনে রেখেই আনিসের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে ফের আন্দোলনে নামছে বামপন্থী যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই।
এ প্রসঙ্গে ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জী জানিয়েছেন, "মুখ্যমন্ত্রী আনিসের খুনের পরেই বলে দিয়েছিলেন যে কেউ কী ইচ্ছে করে খুন করে? দেখা গেল রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনার মত আনিস খানের খুনেও এই 'অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু' কথাটি চার্জশিটে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী আবারও একটা খুনকে 'অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু' বা 'ছোট ঘটনা' বলে প্রতিফলিত করতে চাইল রাজ্যের বুকে।"
তিনি আরও জানিয়েছেন, "ডিওয়াইএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে আমরা এটা পরিষ্কার বলতে চাই, আনিসের বাবা দাবি করেছেন আনিসের খুন যে পুলিশ করেছে সেই পুলিশকে দিয়ে সিট গঠন করে সেই পুলিশ দিয়ে দোষীদের শাস্তি হতে পারে না। তাই, বিচার বিভাগীয় নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের দাবি করছি।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন