

‘পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশনের (WBCSC) নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। সেই দুর্নীতির তথ্যসহ ১২২ জনের তালিকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে জানালেও, তাঁরা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। নীরবে দুর্নীতিকে প্রশয় দিচ্ছেন তাঁরা।’ শুক্রবার, কলেজ স্ট্রীটে বিক্ষোভ দেখানোর সময় এমনই অভিযোগ করেন ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশন (CSC)-এর মেধাতালিকা ভুক্ত চাকরিপ্রার্থীরা।
একইসঙ্গে, কলেজে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত এবং বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের দাবিতে সরব হয়েছে চাকরি প্রার্থীদের সংগঠন - ২০১৮ সিএসসি এম্পানেল্ড ক্যান্ডিডেটস অর্গানাইজেশন।
এদিন কলেজ স্ট্রিটে বিক্ষোভের পর মিছিল করে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে যান কলেজ চাকরি প্রার্থীরা। তাঁরা এসএসসির বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের আন্দোলনকে সমর্থন ও শুভেচ্ছা জানান তাঁরা। একইসঙ্গে, মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির কাছে TET আন্দোলনকারীদের সঙ্গেও দেখা করেন কলেজ চাকরি প্রার্থীরা।
সম্প্রতি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে টাকা ভর্তি উচ্চশিক্ষা দপ্তরের লেবেল দেওয়া খাম মেলে। এরপরেই, অভিযোগ ওঠে, প্রভাব খাটিয়ে এবং অর্থের বিনিময়ে কলেজে চাকরি পাইয়ে দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ তাঁর ঘনিষ্ঠেরা। উঠে আসে বেশ কিছু প্রবাশালী ব্যক্তির নামও।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারির পর মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, দুর্নীতির বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। জানা থাকলে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন। তা জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে চাকরি প্রার্থীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠির সঙ্গে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত ১২২ জনের নাম সম্বলিত ১০৯ পৃষ্ঠার নথি দেওয়া হয়।
চাকরি প্রার্থীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে তপন মণ্ডল বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন দুর্নীতির প্রমাণ দিলে তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। যোগ্যরা যাতে বঞ্চিত না হন সেটিও দেখবেন। তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে দুর্নীতির শতাধিক তথ্য পাঠিয়েছি। সরকারকে আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী কোনও পদক্ষেপ নেননি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই দুর্নীতির বিষয়ে নীরব। তারই প্রতিবাদে আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি।’
পিএইচডি (PhD) ডিগ্রিধারি টিঙ্কু বিশ্বাস এদিন জানান, ‘২০১৮ সালেই আমার শেষ সিএসসি ছিল। বয়সের বাধার কারণে আর কোনোদিনই আমি কলেজের চাকরির ইন্টারভিউতে বসতে পারব না। অথচ, আমার অ্যাকাডেমিক দিক থেকে বহুগুণ পিছিয়ে থাকা প্রার্থীরাও চাকরি পেয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতির জেরে বঞ্চিত হলাম আমি। আজ আমি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো? আমার মতো বহুজন বঞ্চিত রয়েছেন এই তালিকায়। সরকারের কি কোনও মানবিকতা নেই?’
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন