শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা দেখে অবাক কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বাবার স্কুলেই বিনা নিয়োগপত্রেই তিন বছর ধরে চাকরি করছে ছেলে! কিন্তু কীভাবে সম্ভব? সিআইডিকে পুরো ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসু।
ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের গোথা এ রহমান হাই স্কুলে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হলেন আশিষ তিওয়ারি। তাঁর পুত্র অনিমেষ তিওয়ারি। বাবা প্রধান শিক্ষক হওয়ায় ছেলে সেই সুযোগে প্রভাব খাটিয়ে তিন বছর ধরে কর্মশিক্ষার শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন ওই স্কুলে। তাঁর নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি। কারণ প্রমাণ হিসেবে কোনও নিয়োগপত্রই দেখাতে পারেননি প্রধান শিক্ষকের ছেলে। কিন্ত নিয়মিত বেতন পেয়েছেন তিনি। বিষয়টি অবশ্য জানেন না এস আই (স্কুল পরিদর্শক)।
অভিযোগ ওঠে, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি স্কুলে ভূগোলের শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন অরবিন্দ মাইতি নামের একজন। তাঁর মেমো নম্বর নকল করেই অনিমেষ চাকরি পান। এ বিষয়ে সোমা রায় নামের এক মামলাকারী মামলা করেন। তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম।
বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বসু বলেন, 'এমন ঘটনা হওয়াই উচিত নয়। আমিতো অবাক স্কুল পরিদর্শক এই বিষয়ে কিছুই জানেন না দেখে। কেউ কিছু প্রশ্নও করলেন না? এই ঘটনা রাজ্যে আরও ঘটতে পারে? আমি ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দিচ্ছি।'
বুধবার এই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার সিআইডি-র ডিআইজিকে আদালতে হাজির হতে বলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার সিআইডি-র ডিআইজির সামনে সিআইডি-কে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সমস্ত তথ্য প্রমাণ সঠিক ভাবে বিচার করেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এও নির্দেশ দেন স্কুল পরিদর্শকেই এই নিয়ে এফআইআর দায়ের করতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২ ফেব্রুয়ারি।
এ ছাড়া ২০১৬ সালের পর থেকে যত নিয়োগ হয়েছে, সব শিক্ষকের তথ্য যাচাই করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। আরও এমন নিয়োগ জালিয়াতি হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি। অনিমেষ তিওয়ারির বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।