
ফের প্রকাশ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর দাবি, তৃণমূল, সিপিআইএম থেকে যাঁরা বিজেপি-তে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই দুর্নীতি-হিংসার সঙ্গে যুক্ত। এই মন্তব্যের মাধ্যমে কি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ? উঠছে প্রশ্ন। আগামী বছরেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে দিলীপের এ হেন মন্তব্যে ফের প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব।
শনিবার ছিল আন্তর্জাতিক যোগা দিবস (International Yoga Day)। এদিন সেই উপলক্ষ্যে রানি রাসমণি রোডের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন দিলীপ। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "বাংলার যে রাজনীতি, সিপিআইএম-তৃণমূল থেকে রোগটা আমাদের মধ্যেও এসে গিয়েছে, যে বিরোধী মানেই শত্রু। দলে এসে গেলে আজ মিত্র। আবার চলে গেলে শত্রু। কিন্তু বিজেপি রাজনীতির জন্য শত্রু বা মিত্র হবে না। বিরোধী নেতাকে (রাহুল গান্ধীকে) জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁকে সম্মান জানানো হয়েছে। আমি তো অনেককেই এই সম্মান দিই। অনেকে আবার সেটা হজম করতে পারেন না। কিন্তু এই দূষিত রাজনীতি করে না বিজেপি"।
প্রাক্তন রাজ্য বিজেপির সভাপতি বলেন, "সৌজন্য দেখা যাচ্ছে না, কারণ যাঁরা তৃণমূল বা সিপিএম থেকে এসেছেন, তাঁরা ওই সৌজন্যে অভ্যস্ত নন। তাঁরা হিংসা, দুর্নীতির রাজনীতিতে অভ্যস্ত। বিজেপি-র উদার রাজনীতি, বসুধৈব কুটুম্বকম বা সবকা সাথ, সবকা বিকাশ বললেও, হজম করতে পারেন না। তাই এই ধরনের সমস্যা হয় তাঁদের। বিজেপি-র নীতি কিন্তু পরিষ্কার। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দেখেই চলা উচিত বিজেপি-র।"
উল্লেখ্য, সম্প্রতি লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান নরেন্দ্র মোদি থেকে বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকেই। তাঁদের পাল্টা ধন্যবাদ জানান রাহুল। সেই শুভেচ্ছাবার্তার স্ক্রিনশট নিয়ে পোষ্ট করা হয় দিলীপ ঘোষের দফতর থেকেও। এর আগে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। যা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। মনে করা হচ্ছে এই পোস্ট বা মন্তব্যের মাধ্যমে সেই কটাক্ষেরই জবাব দিলেন দিলীপ।
তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী দিলীপের এই মন্তব্যে সমর্থন করেছেন। তাঁর মতে, “দিলীপ ঘোষ একদম ঠিক কথা বলেছেন। শুভেন্দু অধিকারী দল বদল করে বিজেপিতে গিয়েছেন। কাগজ মুড়িয়ে টাকা নিতে তো দিলীপ ঘোষকে দেখা যায়নি, দেখা গিয়েছে শুভেন্দুকে?”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপির অভ্যন্তরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা শুভেন্দুকে ভালোভাবে নেয়নি দিলীপ ঘোষ-এর মতো পুরানো নেতৃত্ব।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন